সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: তৃণমূলের দিদিকে বলো ও গণপ্রচার কর্মসূচিতে গিয়ে আমজনতার আবদার মেনে এক মহিলার সঙ্গে ‘ফুল’ (সই) পাতালেন মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু। সোমবার পুরুলিয়ার মানবাজার বিধানসভার হুড়া ব্লকের দলদলি গ্রামে দলের এই কর্মসূচিতে গিয়ে একেবারে রীতিনীতি মেনে ‘সই’ পাতানোর পর্ব চলে। রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর সঙ্গে ওই গ্রামের বাসিন্দা চিন্তামণি মাহাতোর এই ‘ফুল’ পাতানোর দৃশ্য এখন সোশাল সাইটে ভাইরাল।
দুর্বা ঘাস, চন্দনের ফোঁটায় একে অপরকে বরণ। সেইসঙ্গে মিষ্টি মুখ। শঙ্খধ্বনি থেকে মহিলাদের উলু দেওয়া। ‘সই’ পাতানোর পর্বে বাদ গেল না কিছুই। সবে মিলিয়ে এই ‘ফুল’ পাতানোর কাজে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি যেন অন্য মাত্রা পেল। রাজ্যের মন্ত্রী এভাবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে ‘সই’ পাতানোয় উচ্ছ্বসিত এদিন মন্ত্রীর সঙ্গে থাকা দলের নেতা-কর্মীরাও। রাজ্যের মন্ত্রী যাঁকে ঘিরে একাধিক নিরাপত্তারক্ষী, লাল বাতির গাড়ি সহ নানা প্রোটোকল। অথচ সেই মন্ত্রীই গ্রামের মহিলাকে আপন করে এক সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হলেন। মন্ত্রীকে বন্ধু হিসাবে পেয়ে এখন রীতিমতো আবেগে ভাসছেন ওই দলদলি গ্রামের মহিলা চিন্তামণি মাহাতো।
মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু বলেন, “আমাদের গ্রাম বাংলায় এই ‘ফুল’ বা ‘সই’ পাতানো একটা রীতি। ছোটোবেলায় আমরা এইভাবে ‘ফুল’ পাতাতাম। দুই পরিবারের মধ্যে একটা মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠত। দলের কর্মসূচিতে এসে যে এমন ঘটনা ঘটবে তা ভাবতেই পারছি না। আমিও ভীষণ খুশি। আসলে এইসব সংস্কৃতি এখন হারিয়ে যাচ্ছে।”
গত রবিবার দ্বিতীয় দফার গণপ্রচার কর্মসূচি শুরু করেন মানবাজার এক নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যান বিভাগের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু। রাত পর্যন্ত ওই গ্রামের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ করেন মন্ত্রী। সমস্যার কথা শুনে তা খাতায় তালিকাভুক্ত করেন। গুচ্ছ সমস্যার মধ্যে বেশ কয়েকটি সেখানে দাঁড়িয়ে সমাধান করেন। সমস্যা খুব দ্রুত মেটানোর আশ্বাস দেন। তারপরেও যদি মেটাতে না পারেন তখন ‘দিদিকে বলো’র ফোন নম্বরে জানানোর পরামর্শও দিয়ে আসেন তিনি। একেবারে সোজাসাপটাভাবে মন্ত্রীর কথা শুনে অভিভূত হয়ে যান গ্রামের বাসিন্দারা। তাই তো সোমবার সকালে চিন্তামণি মাহাতো মন্ত্রীর সঙ্গে ‘ফুল’ পাতানোর প্রস্তাব দিয়ে বসেন। তারপর সকালে চলে এই ‘ফুল’ পাতানোর নানান নিয়ম। এই পর্ব সেরে ‘সই’ চিন্তামণি মাহাতোকে জড়িয়ে ধরে মন্ত্রী সন্ধ্যারানি বন্ধু তথা সমগ্র গ্রামের বাসিন্দাকে বলে যান, “মন খারাপ করবেন না। খুব তাড়াতাড়ি আবার আসব।” তখন যেন আবেগে ভাসছে সমগ্র গ্রাম। চিন্তামনির সব চিন্তা যেন দূর হয়ে চোখে আনন্দাশ্রু। তাঁর কথায়, “এই মাঝবয়সে রাজ্যের স্বয়ং মন্ত্রীকে যে ‘ফুল’ হিসাবে পাব তা ভাবতেই পারছি না। ‘দিদিকে বলো’র অনুষ্ঠানই যেন এমন সই পাতানোর সুযোগ নিয়ে এল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.