Advertisement
Advertisement
Madhyamgram

টিভির রিমোট নিয়ে স্বামীর বচসা, ব্লিচিং পাউডার খাইয়ে মেয়েকে ‘খুন’, আত্মঘাতী গৃহবধূ!

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনওদিন বড় কোনও অশান্তি ছিল না, এমন ঘটনায় তাজ্জব প্রতিবেশীরাও।

Wife allegedly killed daughter and self after having verbal spat with husband at Madhyamgram

প্রতীকী ছবি।

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 1, 2025 8:50 pm
  • Updated:March 1, 2025 8:57 pm  

অর্ণব দাস, বারাসত: আর্থিক অনটন ছিল পরিবারে। তাই মাঝেমধ্যে টুকটাক সমস্যা লেগে থাকত। কিন্তু এক মেয়েকে নিয়ে মোটের উপর বড় অশান্তি ছিল না। টিভির রিমোট ভাঙা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় সম্প্রতি। কিন্তু তার জন্য যে স্ত্রী এত বড় সিদ্ধান্ত নেবে, তা দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি মধ্যমগ্রামের শৈলেশনগরের প্রসেনজিৎ রায়। অথচ বাস্তবে ঘটল তেমনই। শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে স্ত্রী ও মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধারের পর কার্যত স্তব্ধবাক প্রসেনজিৎ। মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ব্লিচিং পাউডার খাইয়ে মেয়েকে খুনের পর আত্মঘাতী হয়েছেন প্রসেনজিতের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা। গোটা বাড়িতে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো ছিল।

জানা যাচ্ছে, ঘটনার দিন সকালে স্বামী কাজে যাওয়ার সময় টিফিন তৈরি করে দিয়েছিলেন স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা রায়। বিকেল পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। তারপরেই স্বামী প্রসেনজিতের কাছে প্রিয়াঙ্কার একটি মেসেজ আসে। তাতে লেখা ছিল, ‘সকালে তোমাকে যেটা বলেছি, সেটা কাউকে বোলো না’। এতেই সন্দেহ হলে তৎক্ষণাৎ স্ত্রীকে ফোন করেন প্রসেনজিৎ। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা ফোন তোলেননি। সন্দেহ আরও তীব্র হয় তাঁর। এরপরই প্রতিবেশীদের ফোন করে স্ত্রীর খোঁজ নিতে বলেন প্রসেনজিৎ। কেউই ডেকে সাড়াশব্দ পাননি। শেষে দরজা ভেঙে দেখা যায়, রান্নাঘরের সামনে প্রিয়াঙ্কার নিথর দেহ পড়ে, বেডরুম থেকে উদ্ধার হয় বছর পাঁচেকের মেয়ে প্রশংসার মৃতদেহ!

Advertisement

শুক্রবার রাতে মধ্যমগ্রাম থানার দোহারিয়া শৈলেশনগর এলাকার এই ঘটনা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘরের ভিতর থেকে ব্লিচিং পাউডারের জার-সহ অ্যাসিডের খালি বোতল উদ্ধার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, অ্যাসিড বা ব্লিচিং পাউডার খাইয়ে মেয়েকে খুন করার পর নিজেও খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে ‘মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ লেখা রয়েছে বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। বারাসত জেলা পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খরিয়া জানিয়েছেন, “বাড়িটি কর্ডন করে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের খবর দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য দুটি দেহ পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পরই কি খেয়ে মৃত্যু হয়েছে তা জানা যাবে। সুইসাইড নোটের হাতের লেখা যাচাই করা হচ্ছে।”

স্থানীয় একটি পিচবোর্ড তৈরির কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন প্রসেনজিৎ রায়। স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা গৃহবধূ। তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান প্রশংসা। প্রতিবেশী সকলের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক ছিল প্রিয়াঙ্কার। তাঁর ও মেয়ের এহেন মর্মান্তিক পরিণতির ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না কেউই। প্রতিবেশী মধুমিতা চৌধুরী বলেন, “খুব ভালো পরিবার ছিল। প্রিয়াঙ্কা নিজেও খুব ভালো মেয়ে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তেমন কোন অশান্তি ছিল না। একটা রিমোর্ট ভেঙে ভাঙা নিয়ে সমস্যা অশান্তি শুনেছিলাম। কিন্তু এটা তো স্বাভাবিক, হতেই পারে। তাঁর জন্য এমন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে! আমরা মানতে পারছি না।” মৃতার স্বামী প্রসেনজিৎ রায় বলেন, ”শুক্রবার দুপুরেও ফোনে স্ত্রীর সঙ্গে স্বাভাবিক কথা হয়েছিল। বিকেলের পর হঠাৎ মেসেজ পাঠায় প্রিয়াঙ্কা। সংসারের কিছু বিষয় নিয়ে সকালে ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল। ও আমাকে কিছু কথা বলেছিল। এরপর আমি কাজে চলে আসি। এর জন্য কেন সে এমন ঘটনা ঘটাবে, সেটাই বুঝতে পারছি না।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement