ছবি: প্রতীকী
দেব্রবত মণ্ডল, বারুইপুর: মাঝেমধ্যেই স্বামীর কাছ থেকে টাকা ধার নিতেন স্ত্রী এবং তাঁর পুরুষ বন্ধুও। আবার তা মিটিয়েও দিতেন। এরকমই মোটা টাকা ধার নেওয়ার পর অনেকদিন কেটে গেলেও তা ফেরত দেননি তাঁরা। সেই টাকা ফেরত চাওয়ার পরিণতি হয়েছিল মারাত্মক। স্বামীকে প্রথমে গুলি করে এবং পরে দেহটিকে দু’টুকরো করে মাটিতে পুঁতে দিয়েছিলেন স্ত্রী এবং তাঁর বন্ধু। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ৮ বছর মিলল সুবিচার। হত্যাকারীর যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দিল আদালত।
সোনারপুরের রেনিয়া পার্কের ২০১৪ সালের ঘটনা। মদন রায় ও সাবিত্রী রায়ের ১২ বছরের দাম্পত্য। সাবিত্রীদেবীর বন্ধু ছিল জ্ঞান শর্মা। প্রায়শই সে মদন-সাবিত্রীর বাড়িতে আনাগোনা করত সে। প্রয়োজনে মদনের থেকে টাকা ধার নিত জ্ঞান শর্মা। আবার সময় মতো ফেরতও দিয়ে দিত। কিন্তু শেষবার সেই টাকা ফেরত চাইলে দেয়নি জ্ঞান এবং সাবিত্রী দেবী। ফেরত চাইলে মদন রায়কে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তারা। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে দেহটি দু’টুকরো করে বস্তায় মুড়ে দিনেশ ত্রিবেদী নামে এক ব্যক্তির জমিতে পুঁতে দেয় তারা।
কিন্তু কথায় বলে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। জ্ঞান শর্মার এক সঙ্গী পুরো ঘটনার কথা সে বছরই সোনারপুর থানার পুলিশকে জানিয়ে দেয়। আটক করা হয় সাবিত্রী এবং তার বন্ধু জ্ঞান শর্মাকে। সোনারপুর থানার পুলিশ আধিকারিকরা দীনেশ ত্রিবেদীর জমি থেকে মদনবাবুর দেহটি তোলার ব্যবস্থা করে। তারপর সাবিত্রী দেবী ও তার বন্ধু জ্ঞান শর্মা দেহ শনাক্তকরণ করে। তার পর শুরু হয় বিচারপক্রিয়া। ৮ বছর পর মিলল সুবিচার।
শনিবার মামলাটির নিষ্পত্তি হল। আসামী জ্ঞান শর্মাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিল আদালত। সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে তিন মাসের জেল খাটতে হবে তাকে। অন্যদিকে, মদনবাবুর স্ত্রী আসামি সাবিত্রী রায়কে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই মাসের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওইদিকে দীনেশ ত্রিবেদীকে বেকসুর খালাস করলেন বারুইপুর অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত বিচারক মান্না সাহেব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.