ছবি: প্রতীকী
সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: দিন ছয়েক আগে মারা গিয়েছেন স্বামী। গ্রামেই তাঁর দাহকাজ সম্পন্ন হয়েছিল। যেখানে স্বামীর দেহ দাহ করা হয়েছিল, ঠিক ৬ দিন পর সেখানেই মিলল স্ত্রীর অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, স্বামীর শোকেই স্ত্রী গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে ঝাড়গ্রামের (Jhargram) জামবনি থানার দর্পশিলা গ্রামে। ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত ওই মহিলার নাম নিয়তি শন্ড। বয়স ৩৭ বছর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়তির স্বামী পরমেশ্বর শন্ড জ্বরে ভুগছিলেন। ভরতি করা হয়েছিল ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে। গত ৩১ জুলাই তিনি মারা যান। নিয়তি-পরমেশ্বরের কোনও সন্তান নেই। স্বামী, স্ত্রীই থাকতেন। প্রতিবেশীরা বলছেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে নিয়তি অবসাদে চলে যান, অন্যমনস্ক থাকতেন। এমনকী আত্মহত্যা (Suicide) করার কথাও বলতেন। গ্রামে তাঁর আত্মীয়পরিজনরাই নিয়তিদেবীর দেখাশোনা করছিলেন। রাতে একা না রেখে তাঁর সঙ্গে দূর সম্পর্কের এক ননদ ঘুমাতেন।
গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, রবিবার ভোরে তাঁকে ঘরে না দেখতে পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে, যেখানে নিয়তির স্বামী পরমেশ্বরকে দাহ করা হয়েছিল সেখানেই অগ্নিদগ্ধ অবস্থা নিয়তিদেবীর মৃতদেহ দেখতে পান গ্রামবাসীরা। ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে রাস্তার উপর পড়েছিল কেরোসিন তেলের জারিক্যান, দেশলাই, পোড়া কাপড়ের অংশ। গ্রামবাসীরা মনে করছেন, স্বামীর শোকেই ওই মহিলা আত্মঘাতী হয়েছেন। রাতে যখন তাঁর ননদ ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, সেই সুযোগে নিয়তি বাড়ির বাইরে গিয়ে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হন।
পুলিশও প্রাথমিক তদন্তে মনে করছে, ওই মহিলা আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর দেহের প্রায় নব্বই শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। এদিন ভোরে স্থানীয় সূত্রে পুলিশ খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে প্রথমে চিল্কিগড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ঝাড়গ্রামে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে দেহটি। এমন ঘটনায় কার্যত হতভম্ব গ্রামবাসীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.