ছবি: প্রতীকী
অর্ণব দাস, বারাকপুর: স্ত্রী স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। কিন্তু বছর বারোর কন্যাসন্তানকে দিব্যি আগলে রাখতেন। মেয়েকে ছাড়া এক মুহূর্ত যেন থাকতে পারতেন না। ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে মেয়ে। দিনকাল ভালো নয়, বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর তাঁর সঙ্গে নানা অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটতে পারে – দিনরাত এই আশঙ্কায় ভুগতেন মা। আর তার জেরে নিজের হাতে একমাত্র সন্তানকে খুন করলেন মা। এমন অভিযোগ ঘিরে উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুরের আনন্দপুরীর ডি রোডে জোর শোরগোল।
শ্যামনগরের গাঙ্গুলিপাড়ার বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ ঘোষ। বছর পনেরো আগে বিয়ে হয় তাঁর। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর বাবা-মা ওই দম্পতি। দিনকয়েক আগে বারাকপুরের আনন্দপুরীর ডি রোডে বসবাস শুরু করেন তাঁরা। প্রতিদিন দুপুরে মেয়েকে নিয়ে আলাদা ঘরে ঘুমোন মা। সেই মতো শুক্রবারও আলাদা ঘরে শুতে যান দুজনে। দুপুর গড়িয়ে সন্ধে হলেও ঘর থেকে বেরোচ্ছেন না মা-মেয়ে। তা দেখে সন্দেহ হয়। বাবা দরজা ঠেলে ভিতরে ঢোকেন। দেখেন বিছানায় শুয়ে রয়েছে বছর বারোর কন্যাসন্তান রাজন্যা ঘোষ। ঘরে পায়চারি করছেন স্ত্রী। তাঁর আচরণ একেবারে অন্যরকম। সমানে বিড়বিড় করে চলেছেন। বলছেন, “বড় হচ্ছে। ওর উপরে অন্যেরা অত্যাচার করবে, এটা হতে পারে না। আর কেউ ওর কিছু করতে পারবে না।”
মৃত মেয়েকে দেখে কার্যত তাজ্জব হয়ে যান ইন্দ্রজিৎবাবু। খবর দেন পুলিশে। খবর পাওয়ামাত্রই টিটাগড় থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। ছাত্রীর মাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ইন্দ্রজিৎবাবু বলেন, “স্ত্রী স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় ভুগছে। তার চিকিৎসা চলছে। মেয়েকে আগলেই রাখত। কিন্তু এমন করবে ভাবতে পারছি না।” পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ঘুমন্ত সন্তানের গলা টিপে খুন করেছেন ওই মহিলা। তাকে জেরা করে ঘটনা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে বলেই আশা তদন্তকারীদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.