অর্ণব দাস, বারাসত: কখনও চড়। কখনও ঘুসি। আবার কখনও বা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় বিছানায়। যাঁকে মারধর করা হচ্ছে, তিনি বোন। আর যারা মারধর করছে তারা ওই মহিলার দাদা, বউদি, বড়দি। সম্পত্তিগত বিবাদের জেরে এভাবে ওই তরুণীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল মারধরের ভিডিও। যা দেখে শিউড়ে উঠছেন প্রায় সকলেই।
নির্যাতিতা উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাত পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নবপল্লি পার্কের মাঠ এলাকার বাসিন্দা। কর্মসূত্রে দুবাইতে ছিলেন তিনি। গত মাসে চেন্নাইয়ের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়। সে কারণে বারাসতের বাড়িতে ফেরেন। আর তারপরই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সাক্ষী হন। তিনি বলেন, “আমার মাকে ভাইবোনরা ২০২১ সালে মারধর করে। হাত-পা কেটে দেওয়া হয়। দা দিয়েও আঘাত করা হয়। তারপর একদিন দিদি, তার ছেলে, বোন ও ভগ্নিপতি আসে। বলে মেরে ফেললে জানাজানি হয়ে যাবে। সেই সময় আমি দুবাইতে। মা আমাকে ফোনে কেঁদে কেঁদে বলে। আমি সহ্য করতে পারিনি। আমার মামা মাকে নিয়ে থানায় আসে। মহিলা পুলিশকর্মী বলেছিলেন ব্যবস্থা নেব। কিন্তু মা নিতে দেননি। ইতিমধ্যে ৫ বছর কেটে যায়। ওদের সঙ্গে মায়ের কোনও সম্পর্ক ছিল না। এরপর আমি মায়ের সব দায়িত্ব পালন করি। মায়ের হাঁটুর সমস্যা ছিল। চেন্নাইতে মায়ের হাঁটুর অপারেশন হয়। অত্যাচারের জেরে মা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। সে কারণে মায়ের মস্তিষ্কেও একটি অস্ত্রোপচার হয়। চিকিৎসকরা বলেন মায়ের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু ২৮ মার্চ মা মারা যান।”
ওই মহিলার আরও জানান, “এরপর আমি বারাসতে চলে আসি। আমি বাড়িতে ঢোকার পর থেকে অত্যাচার করে। বাজে বাজে কথা বলে। আমার বান্ধবী বলে বাড়িতে গোপনে একটি ক্যামেরা লাগাতে। আমিও লাগাই। একদিন দাদা ও বউদি আসে। আমাকে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। ওরা জানলা বন্ধ করে দেয়। তারপর ছোট বোন ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। আমার দাদা চেপে ধরে। বড়দিদি, বউদি মারধর করে। ভগ্নিপতিও ওদের মারধরে উৎসাহ দেয়। আমার মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হয়।” অত্যাচারের পর মামা ও বান্ধবীর সাহায্যে বারাসত হাসপাতালে যান ওই তরুণী। বারাসত থানাতেও যান তিনি। অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই মহিলার দাদাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে দিদি, বউদিরা আটক কিংবা গ্রেপ্তার না হয়নি। তাই আপাতত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তরুণী। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুলিশ ব্যবস্থা নিক, এই আর্জি জানিয়েছেন ওই তরুণী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.