ছবি: প্রতীকী
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ (Cyclone Yaas) কেড়েছে ঘরবাড়ি। আয়ের আর উপায় না থাকায় এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই গভীর জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের মুখে পড়ে মৃত্যু হল এক মহিলার। নিহত বছর তিরিশের ভগবতী মণ্ডল। মর্মান্তিক ঘটনা সুন্দরবনের (Sunderban) বসিরহাট রেঞ্জের ঝিলা ৪ নম্বর জঙ্গলে। বাঘের আক্রমণ থেকে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান ভগবতীর স্বামী ও আরেক সঙ্গী। মৃত্যুর ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম।
জানা গিয়েছে, সোমবার গোসাবার সাতজেলিয়া চরঘেরি এলাকা থেকে ঝিলার জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন ভগবতী মণ্ডল। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী ও আরেক সঙ্গী। কাঁকড়া খুঁজতে খুঁজতে চলে যান খালের ভিতরের দিকে। তখনই বাঘের (Royal Bengal Tiger) আক্রমণের মুখে পড়েন তিনি। কোনওক্রমে আড়ালে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পান ভগবতীর স্বামী ও ওই সঙ্গী। ততক্ষণে ভগবতীর শরীরে থাবা বসিয়েছে সুন্দরবনের বাঘ। তাঁর দেহটিকে বাঘের মুখ থেকে ছাড়িয়ে বাঘের নাগালের বাইরে নিয়ে যান বাকি দু’জন। বাঘ সরাসরি মহিলার ঘাড়ে কামড় বসানোয় সেখানেই প্রাণহানি হয় তাঁর।
এরপর ভগবতীর দেহ গ্রামে এনে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গভীর জঙ্গলে শিকারে যাওয়ার জন্য এই মৎস্যজীবী দলটির কোনও বৈধ কাগজপত্র ছিল না। যশের প্রবল তাণ্ডবে ভেসে গিয়েছিল বাড়িঘর। বিকল্প আয়ের পথ না থাকায় সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন তাঁরা। আর তাতেই ঘটে গেল প্রাণহানি। এভাবেই লাইসেন্স ছাড়া পেটের টানে চোরাপথে সুন্দরবনের জঙ্গলে প্রবেশ করেই অধিকাংশ মৃত্যু ঘটেছে এখানে।
আসলে, এই এলাকার খাঁড়ির দিকে গভীর জঙ্গলই মূলত রয়্যাল বেঙ্গলের চারণক্ষেত্র। একইসঙ্গে, খাঁড়ির জলে প্রচুর কাঁকড়াও মেলে। এসব এলাকায় মানুষের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু কাঁকড়া কিংবা অন্যান্য প্রাণী শিকারের আশায় হাঁটতে হাঁটতে কেউ কেউ এই ‘নিষিদ্ধ অঞ্চলে’ ঢুকে পড়েন। তাতেই এ ধরনের বিপর্যয় ঘটে। স্থানীয় প্রশাসন বারবার মৎস্যজীবীদের সতর্ক করা সত্ত্বেও তাতে যে লাভ বিশেষ হয় না, ভগবতীর ঘটনা ফের তা প্রমাণ করল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.