অর্ণব দাস, বারাসত: বাইক দুর্ঘটনার একমাত্র ছেলের মৃত্যুর শোকে সরস্বতী পুজোর রাতে ছেলের প্রিয় হলুদ পাঞ্জাবি এবং ছবি বুকে জড়িয়ে আত্মঘাতী হলেন মা। মর্মান্তিক এই ঘটনায় অশোকনগর থানার গোলবাজার এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া।
মৃতার নাম রীতা সজ্জল (৪০)। বাড়ি অশোকনগর পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে। স্বামী পলাশ সজ্জলের গোলবাজারে সেলুন রয়েছে। সেখানেই রীতাদেবী শুকনো খাবারের দোকান চালাতেন। স্থানীয় এবং পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দম্পতি একমাত্র ছেলে বছর বাইশের পঙ্কজ মাস ছয়েক আগে হুগলিতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানেই বাইক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। তার পর থেকেই ছেলের শোকে অবসাদে ছিলেন রীতাদেবী। দুবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু স্বামীর নজরে পড়ায় সেটা সম্ভব হয়নি।
বুধবার সরস্বতী পুজোর দিন সকালে দম্পতি গোলবাজারের দোকানেও গিয়েছিলেন। তখনই মৃত ছেলের বয়সিদের পুজোর দিনে ঘুরে বেড়াতে দেখে শোকে ভেঙে পড়েন মা। তার পর থেকে একপ্রকার চুপচাপই হয়ে যান তিনি। সন্ধের পর দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন রীতাদেবী। স্বামী পলাশ তখনও সেলুনেই ছিলেন। রাতে বাড়িতে ফিরে অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে রান্নাঘরের ঢুকে সিলিংয়ের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। মৃতার একহাতে ছেলে ছবি আর শরীরে ছেলের পচ্ছন্দের হলুদ পাঞ্জাবি জড়ানো ছিল বলেই এলাকাবাসীরা জানিয়েছে। পরে অশোকনগর থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
মৃতার স্বামী পলাশ সজ্জল বলেন, “২২ বছরের একমাত্র ছেলের বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েছিলেন স্ত্রী। আগেও আত্মহননের চেষ্টা করেছিল। ছেলে বেঁচে থাকলে সরস্বতী পুজোর দিন হলুদ রঙের পাঞ্জাবি পড়ে ঘুরতে বের হত অন্যদের মতো। এটাই সম্ভবত সারাদিন দোকানে বসে ভেবেছিল রীতা। বাড়িতে ফিরে সেই হলুদ পাঞ্জাবিটাই আলমারি থেকে বের করে। সেটা দেহে জড়িয়ে আত্মহত্যা করে রীতা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.