পলাশ পাত্র, তেহট্ট: মালদহের পর এবার নদিয়া। তেহট্টে পায়রা চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার এক যুবক। থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে আক্রান্তের পরিবার। অভিযুক্ত আবার পেশায় আইনজীবী।
মাস দুয়েক আগের ঘটনা। তেহট্টের বেতাই বাজার এলাকায় থাকেন গোবিন্দ বিশ্বাস। পেশায় তিনি আইনজীবী। নিজের বাড়ির ছাদের খাঁচায় পায়রা পুষেছেন গোবিন্দবাবু। ওই আইনজীবীর অভিযোগ, বেতাইয়ে তখন সিদ্বেশ্বরী মেলা চলছিল। একদিন রাতে তাঁর স্ত্রীর নজরে পড়ে, ছাদে উঠে খাঁচা থেকে পায়রা চুরি করছে স্থানীয় যুবক নয়ন চৌধুরি। ওই যুবকের পিছনে ধাওয়া করেছিলেন গোবিন্দবাবু। কিন্তু চোরকে ধরতে পারেননি তিনি। গোবিন্দ বিশ্বাসের দাবি, পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে মোটর বাইক ফেলে পালিয়ে যান নয়ন। এদিকে ঘটনা জানাজানি হতেই তাঁর বাড়িতে জড়ো হন স্থানীয় বাসিন্দারা। সিদ্ধান্ত হয় সালিশি সভা ডেকে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হবে।
ঘটনার কয়েকদিন পর পায়রা চুরি নিয়ে বিবাদ মেটাতে সালিশি সভা বসে গোবিন্দ বিশ্বাসের বাড়িতে। অভিযোগ, সভা চলাকালীন মেজাজ হারান ওই আইনজীবী৷ অভিযুক্ত নয়ন চৌধুরিকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করেন। সম্প্রতি সেই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়েছে নদিয়ার তেহট্টে। শনিবার রাতে গোবিন্দ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত নয়ন চৌধুরির পরিবারের লোকেরা। এদিকে চাপের মুখে পায়রা চোর সন্দেহে যুবককে মারধরের ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত আইনজীবী। ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, আক্রান্ত নয়ন চৌধুরির বাড়ি বেতাইয়ের লালবাজার এলাকায়। নয়নের বাবা ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থায় ভাল নয়। আক্রান্তের ঠাকুমার দাবি, নাতিকে মারধরের হাত থেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কোনও লাভ হয়নি।
দিনকয়েক আগেই মালদহের বৈষ্ণবনগরে বাইক চোর সন্দেহে বছর সাতাশের এক যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয়। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে মারা যান তিনি। রাজ্য সরকারের তরফে দুই লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যও পেয়েছে নিহতের পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.