নিজস্ব সংবাদদাতা, তেহট্ট: অসুস্থ বাবাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে একসঙ্গে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ওষুধ কিনতে গিয়ে আচমকা হার্ট অ্যাটাক হয়ে মত্যু হল ছেলের। মত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। কিন্তু ছেলের মৃত্যুর কথা জানেন না বাবা। বাবা-ছেলের এই ঘটনায় শোকে ভাসছে নদিয়ার পলাশিপাড়ার পরিজনরা।
অফিসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বাবা ৷ হাসপাতালে ভরতি করেন ছেলে৷ তারপর আর বাড়িমুখো হননি৷ ভেবেছিলেন, বাবাকে সুস্থ করে তবে দু’জনে একসঙ্গে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু কথা রাখতে পারলেন না। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটে গেল অঘটন৷ তেহট্ট মহকুমা অফিসের ট্রেজারি দপ্তরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পলাশিপাড়ার নাথপাড়ার বাসিন্দা অমরেন্দ্র অধিকারী৷ বুধবার বিকেলে অফিসে বুকে যন্ত্রণা শুরু হয়৷ প্রথমে ভেবেছিলেন, হয়তো সামান্য ব্যথা, ঠিক বাড়ি পৌঁছে যাবেন৷ কিন্তু যন্ত্রণা বাড়তে থাকে৷ পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে অসুস্থতাও৷ সহকর্মীরা খবর দেন তাঁর বাড়িতে৷ বাবার অসুস্থতার খবর শুনে এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে অফিসে ছুটে এসেছিলেন ছেলে অনির্বাণ৷ বাবাকে উদ্ধার করে সোজা নিয়ে যান তেহট্ট হাসপাতালে৷ কিন্তু ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বাবাকে সুস্থ করতে পারেননি৷ শারীরিক অবনতি শুরু হয়৷ চিকিৎসকদের পরামর্শেই অমরেন্দ্রকে ভরতি করা হয় কল্যাণীর এমজেএন হাসপাতালে৷ চিকিৎসকরা জানান, হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বছর আটান্নর অমরেন্দ্রর৷ শারীরিক অবস্থা সংকটজনক। বাবার অসুস্থতার পর থেকে রাতভর আর বাড়ি ফেরেননি অনির্বাণ৷ ভেবেছিলেন, বাবাকে সুস্থ করে তবেই বাড়ি ফিরবেন৷ সেই মতো বৃহস্পতিবার সকালেও হাসপাতালে বাবার কেবিনের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন অনির্বাণ৷ চিকিৎসকরা ওষুধ কিনে আনতে বলেন অনির্বাণকে৷ বাবার প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে তড়িঘড়ি হাসপাতালের লিফটে চড়েন৷ কিন্তু নিচে নেমেই আচমকা সংজ্ঞা হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান অনির্বাণ৷ হাসপাতালে থাকা অন্য রোগীর পরিজনদের চিৎকারে চিকিৎসকরা চলে আসেন৷ তড়িঘড়ি চিকিৎসা শুরু হয় তাঁর৷ কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি৷ চিকিৎসকরা জানান, হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছেন অনির্বাণ৷
কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন অনির্বাণ৷ পাঞ্জাবে একটি সংস্থায় চাকরিও করছিলেন তিনি। কিছুদিন আগেই বাড়ি ফিরেছিলেন। এলাকায় ভাল ছেলে হিসাবে সুনামও ছিল তাঁর৷ আচমকা এহেন মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তাঁর পরিজনেরা৷ কঠিন বাস্তব মেনে নিতে পারছেন না কেউ৷ চোখের জলে ভাসছে পলাশিপাড়ার নাথপাড়া৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.