‘৫০-৫০-১’। এই নামে ধারাবাহিক গণ-আন্দোলন সংগঠিত করার ডাক দেওয়া হয়েছে মার্কিন মুলুকে। ১ মে ছিল সংগঠনের তৃতীয় আন্দোলন।
‘৫০৫০১’। মনে হতে পারে ট্রেনের নাম্বার। বা কোনও ‘ইন্টারনেট এরর’। আবার ‘৫০৫০১’ দেখে কারও কিছু মনে না-ও হতে পারে। সবের ‘অর্থ’ থাকে, কিন্তু সেই অর্থ সবাই যে বুঝবে ও জানবে, তার নিশ্চয়তা কোথায়? তবে এই ‘৫০৫০১’ ঘিরে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এখন তোলপাড়। এর মধ্যে দিয়ে সংকেতিত হয়েছে একটি বিশেষ বার্তা– যদি পড়ি এইভাবে– ‘৫০-৫০-১’, তাহলে যা দাঁড়াবে– ‘ফিফটি প্রটেস্টস, ফিফটি স্টেটস, ওয়ান মুভমেন্ট’। যার মূল সুর এক ও অভিন্ন– ‘স্টপ বিলিওনেয়ার টেকওভার’। যাঁরা প্রবল ধনী ও অর্বুদপতি, তাঁরা যেন অর্থক্ষমতার জোরে রাষ্ট্রের শৃঙ্খলায় এমন কোনও অদলবদল না-আনতে পারেন, যাতে করে সাধারণ মার্কিনিদের সাংবিধানিক ও মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ হতে পারে!
ট্রাম্প প্রশাসন দ্বিতীয় দফায় ১০০ দিন পূর্ণ করেছে সম্প্রতি। কিন্তু এবার যেসব নীতি প্রণয়নের পথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হেঁটেছেন, তা মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ বলে অভিযোগ। পয়লা মে লস অ্যাঞ্জেলস, নিউ ইর্য়ক সিটি, ডেনভার, শিকাগো, ওয়াশিংটন ডিসি-সহ আরও অনেক স্থানে অগণিত মানুষের সমাবেশ ঘটেছিল। এই দিনে অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকাররক্ষায় সরব হয়েছিলেন তাঁরা।
‘রেডিট’ সমাজমাধ্যমে কে. এভার্ট প্রথম এই আন্দোলন সংগঠিত করেন। অনলাইনে আন্দোলনকে চেনানো হয়েছে দু’টি অভিমুখের ব্যবহারে– ‘#buildtheresistance’ এবং ‘#50501’. প্রথম আন্দোলনটি হয়েছিল এই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি। ৪০টি স্টেটে ৭২ হাজার প্রতিবাদী একত্র হয়েছিলেন বলে জানানো হয়েছে। দ্বিতীয় আন্দোলন অনুষ্ঠিত হয় ১৭ ফেব্রুয়ারি– “নট মাই প্রেসিডেন্ট’স ডে” উপলক্ষে। এরপর তৃতীয় আন্দোলনটি দানা বাঁধল পয়লা মে। সংগঠনের ওয়েবসাইটে এর উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা হয়েছিল: ট্রাম্প এবং তাঁর সহযোগী অর্বুদপতি বন্ধুরা এমন একটি দৌড় শুরু করেছেন, যা আমাদের উপরের দিকে নিয়ে যাওয়ার বদলে আরও নিম্নগামী করছে– শ্রমিকের মজুরি, তাঁদের সুযোগ-সুবিধা এবং মর্যাদাবোধ– সবের হানি ঘটাচ্ছে। সেজন্য মে দিবসে আমরা এই প্রবণতার বিরুদ্ধে এককাট্টা হব।
এমন একটি দেশের কথা আমরা ভাবি, যেখানে ভাগ্যের উপর নির্ভর করে আমাদের বসে থাকতে হবে না। পাবলিক স্কুল চাই, প্রাইভেট স্কুলের বদলে। নিটোল স্বাস্থ্য পরিষেবা চাই, কৌশলী পেশাদারদের বিনিয়োগ তহবিলের বদলে। আমরা চাই দেশের সার্বিক সমৃদ্ধি– মুক্ত বাণিজ্যের নামে অযথা রাজনৈতিক ঘূর্ণাবর্তে পা রাখতে চাই না আর। সেদিন প্যালেস্তাইনের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার কথা উঠে এসেছিল, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাহমুদ খলিলের মুক্তির কথাও আলোচিত হয়। এই প্রতিবাদ আন্দোলন ট্রাম্প প্রশাসনকে ঘরের মাটিতে শক্তপোক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে, তা নিয়ে সংশয় নেই। অবশ্য গণতন্ত্রর স্বার্থে ‘আপনি আচরি ধর্ম’-ই তো প্রত্যাশিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.