সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁও সন্ত্রাসের পর ‘ধর্মের ধ্বজাধারী দৈত্যদানো’দের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন। অপারেশন সিঁদুরের জয়গান গেয়ে দেশের সীমান্তরক্ষীদের কুর্নিশ জানিয়েছিলেন। এবার একজন মা হিসেবে দেশের রত্নগর্ভাদের নিয়ে কলম ধরলেন আলিয়া ভাট। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে যখন ‘দুষ্টু’ প্রতিবেশীর নিন্দায় সমস্বরে গর্জন ছেড়েছেন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তারকারা, তখন সেই আবহেই আলিয়া মনে করিয়ে দিলেন, ‘এই প্রত্যেক বীর সন্তানের উর্দির নেপথ্যে একজন রাত জাগা মা রয়েছেন।’ যেসব লৌহমানবীদের কথা ভেবে অভিনেত্রী নিজেও দু’ চোখের পাতা এক করতে পারছেন না। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে শান্তির বার্তা দিয়ে কী বললেন আলিয়া?
অভিনেত্রী তাঁর দীর্ঘ ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছেন, ‘গত কয়েক রাত ধরে একটা ভিন্ন অনুভূতি হচ্ছে। বাতাস একধরনের নীরবতা বিরাজ করছে। রুদ্ধশ্বাস গোটা দেশ। এবং গত কয়েকদিন ধরে আমরা সেই নীরবতা অনুভব করে চলেছি। একটা চাপা উদ্বেগ কাজ করছে। প্রতিটা খবর, প্রতিটা কথা, এমনকী রাতে খাবারের টেবিলেও পর্যন্ত নিস্তব্ধতা, উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।’ সেই পোস্টেই দেশের অতন্দ্র প্রহরী সেনাজওয়ানের বীরত্বকে কুর্নিশ জানিয়ে আলিয়ার সংযোজন, ‘কোথাও বিপদসঙ্কুল পাহাড়ের ঢালে, কোথাও নিকষ অন্ধকারে আমাদের সেনারা প্রত্যেকে বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছে। সর্বদা সজাগ থাকছে। সিংহভাগ দেশবাসী যখন গৃহবন্দি, তখন আমাদের দেশের নারী-পুরুষেরা (জওয়ান) অন্ধকারে দাঁড়িয়ে নিজেদের জীবন বাজি রেখে ঘুম বিসর্জন দিচ্ছেন শুধুমাত্র আমরা যেন শান্তিতে ঘুমোতে পারি, সেজন্য। এটা শুধু সাহসিকতার প্রতীক নয়, এটা ওঁদের আত্মত্যাগ। আর এই প্রতিটি সেনাজওয়ানের উর্দির নেপথ্যে একজন মা রয়েছেন যিনি বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছেন। সেই মা যিনি জানেন যে, তাঁর বীর সন্তানেরা ঘুমপাড়ানি গান ছাড়িয়ে প্রতিটা মুহূর্তে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছে। এমন এক উত্তেজনার রাত, যে নীরবতা যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে।’
সেই পোস্টেই কাপুর বাড়ির বউমা জানিয়েছেন, রবিরার তিনি যখন মাতৃদিবস পালন করছিলেন তখন দেশের সেসব বীর সন্তানদের মায়েদের কথা ভেবে তাঁর মন কেঁদে উঠেছিল। আলিয়া লিখেছেন, ‘মাতৃদিবসে ফুল বিতরণ এবং আলিঙ্গন করা সময়ে মনে পড়ল সেসব রত্নগর্ভাদের কথা যাঁদের মেরুদণ্ড ইস্পাতসম। সেই লৌবমানবীদের কথা, যাঁরা এই বীর সেনাদের পরম যত্নে বড় করেছেন। যাঁরা এই সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের জন্য গভীরভাবে শোকাহত। ওঁরা তো আর কোনওদিন বাড়ি ফিরবে না। ওঁদের নাম এখন দেশের আত্মার সঙ্গে খোদাই করা হয়ে গিয়েছে। গোটা দেশ কৃতজ্ঞ তাঁদের পরিবারের প্রতি। ওঁরা কঠিন সময়ে ওঁরা শক্তি পাক।’ শেষপাতে সেনাজওয়ানের মা-বাবার প্রতি সম্মান জানিয়ে আলিয়া বলেন, ‘আশা রাখি, আজ রাত থেকে প্রতি রাতে এই নীরবতা যেন শান্তির নীরবতা হয়। এবং প্রার্থনা করছি সেসমস্ত মা-বাবাদের জন্য যাঁরা চোখের জল ধরে রেখেছেন। কারণ আপনাদের প্রাণশক্তি, মনের জোরই গোটা দেশকে শক্তি জোগাবে। দেশের রক্ষকদের জন্য, ভারতের জন্য, আমরা একসারিতেই দাঁড়িয়ে, দেখুন। জয় হিন্দ।’ এমন উত্তেজনাপূর্ণ আবহে আলিয়া ভাটের এহেন শক্তিশালী বার্তা যেন শান্তির জলের মতো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.