সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “কোনও কাজই ছোট নয়, এই কথাটা নিজের মাথায় ঢুকিয়ে নিন। আমাদের মতো বলিউড হিরোরা তো শুধু নামমাত্রই। আমরা শুধু টাকা দিয়ে তাঁদের সাহায্য করতে পারি। কিন্তু ময়দানে নেমে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে হাসিমুখে কাজ করে যাওয়া সেই মানুষগুলোই তো বাস্তবের যোদ্ধা” মন্তব্য আয়ুষ্মান খুরানার। নিজেদের পরিবার-পরিজন ছেড়ে যে মানুষগুলি দেশের সেবায়, দশের স্বার্থে নিজেদের নিয়োজিত করেছেন, সেসমস্ত বাস্তব হিরোদের কুর্নিশ জানাতেই কলম ধরলেন আয়ুষ্মান। বাঁধলেন কবিতা। তাঁদের উদ্দেশে এক আবেগঘন বার্তা দিলেন এই কবিতার মাধ্যমেই। যা নিজে পাঠ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছেন বলিউড অভিনেতা।
“আজ আমরা ভয়ে ভয়ে রয়েছি। বেঁচে ঠিকই রয়েছি, কিন্তু ভিতর থেকে মরে গিয়েছি। স্যালুট ওঁদেরকে, যাঁরা সকাল সকাল আবর্জনা পরিষ্কার করে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখে আমাদের শহরে। মানুষের সেবা করে তারপর আবার সন্ধে হলে ফিরে যায় নিজের আস্তানায়। নিজের মানুষগুলির কাছে। কিন্তু আমরা বোধহয় কখনও ওঁদের প্রাপ্য সম্মানটাও দিইনি ওঁদের। কারণ? কারণ আমাদের তো পয়সা রয়েছে, আমাদের কী যায়-আসে! আর ওঁরা? বেচারারা বাড়ি যাওয়ার সময় একটাই কথা ভাবে, ‘আমার পরিবার যেন সুরক্ষিত থাকে, করোনা যেন না ছুঁতে পারে আমার সন্তানকে’…. এই ধনী-দরিদ্রের বিভাজনের সঙ্গে মানবিকতার অনেক পুরনো সম্পর্ক! এই দেশ দরিদ্ররাই চালিয়ে এসেছে। চালিয়েও যাবে। আমাদের সবরকম খিদমদ করবে, সমস্ত সুবিধে পাইয়ে দেবে আমাদের…. তাই বলছি, এই সংকটকালীন পরিস্থিতি কেটে গেলে আপনার চারপাশের প্রত্যেকটা মানুষকে সম্মান করতে শিখবেন অন্তত”, কবিতা পাঠের মাধ্যমেই এই বার্তা দিলেন আয়ুষ্মান খুরানা।
“এই কবিতাটা করোনা মোকাবিলায় জরুরী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সে সকল যোদ্ধাদের জন্য, যাঁরা প্রতিটা মুহূর্তে লড়ে যাচ্ছেন আমাদের জন্য। আমাদের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে নিজেদের জীবন বাজি রেখে কাজ করে চলেছেন। তাঁদের কুর্নিশ জানাতেই এই শব্দগুলো লিখলাম”, বললেন আয়ুষ্মান খুরানা (Ayushmann Khurrana)।
লকডাউনের জেরে দেশজুড়ে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা যেভাবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছেন, তা বাস্তবেই সাধুবাদ জানানোর মতো। COVID-19 মোকাবিলায় নার্স-চিকিৎসকদের পাশাপাশি পুলিশ, সাফাইকর্মী, পুরসভার কর্মীরা থেকে মুদির দোকান হোক কিংবা সবজি বিক্রেতা, প্রত্যেকেই কিন্তু এই লড়াইয়ে শামিল। লকডাউনের জেরে মায়ানগরীর রাজপথ শুনশান। যে শহর কখনও ঘুমোয় না, আজ তা স্বব্ধ। জরুরি পরিষেবা ছাড়া রাস্তায় দেখা নেই কোনও গাড়ির। উর্দিতে শহরজুড়ে মোতায়েন রয়েছেন হাজারো পুলিশ। মুখে মাস্ক, হাতে স্যানিটাইজার। গোটা শহর যখন সচেতনতার চাদরে মুড়েছে তখন এই মানুষগুলির কিন্তু ছুটি নেই। বিরাম নেই। সদা কর্তব্যে অবিচল। আমার কিংবা আপনাদের মতো ওঁদেরও পরিবার রয়েছে, কিন্তু আমাদের মতো কোয়ারেন্টাইনে গৃহবন্দি থাকতে পারছেন না তাঁরা। সময় কাটাতে পারছেন মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে। কারণ একটাই! জনগণের সেবার জন্যে। আয়ুষ্মানের কবিতাতেও দেশের স্বার্থে, দশের স্বার্থে উদয়াস্ত কর্তব্যে অবিচল থাকা সেই মানুষগুলির কথা ফুটে উঠল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.