শম্পালী মৌলিক: অত্যন্ত একটা অ্যাম্বিশাস প্রোজেক্টে হাত দিতে চলেছেন বৌদ্ধায়ন মুখোপাধ্যায়। তাঁর পরের ছবি হতে চলেছে ‘মরিচঝাঁপি’-র ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
কান থেকে মোবাইলে ধরা দিয়েছিলেন তিনি। তখনই জানালেন নিজের নতুন ছবির কথা। আগের দিনই প্রত্যক্ষ করেছেন ‘রোমা’-র পরিচালক ‘আলফান্সো কুয়ারেস’-এর একটি স্পিচ। সেটা নিয়ে উচ্ছ্বসিত শোনাল তাঁকে। কিন্তু ‘তিন কাহন’ এবং ‘ভায়োলিন প্লেয়ার’-এর পর আবার বাংলা ছবিতে হাত দিচ্ছেন? জিজ্ঞেস করাতে বৌদ্ধায়নের সহজ জবাব “এই বিষয়টাই এমন যে বাংলা ছাড়া অন্য ভাষায় ছবিটা হতে পারে না। প্রায় গত দু’বছর ধরে লিখছি আমি। সঙ্গে রয়েছেন অভিনন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়। বহু পরিশ্রম, পড়াশোনা, রিসার্চ থাকবে এ ছবির নেপথ্যে। দেখেছি বেশ কিছু তথ্যচিত্র। দেখা করেছি সারভাইভারদের সঙ্গেও। ‘মরিচঝাঁপি’ এমন একটা ছবি হওয়া উচিত, যে আমার শিল্পের সঙ্গে এসে মিলে যাবে আমার অ্যাক্টিভিজম। ‘মরিচঝাঁপি’ ম্যাসাকার বাদ দিয়ে তো এই ছবি করা সম্ভব নয়। কাজেই এটাকে কেন্দ্রে রেখে ১৯৭৯-র প্রেক্ষাপটটা উঠে আসবে ছবিতে। এক্কেবারেই পিরিয়ড পিস হতে চলেছে।”
[ আরও পড়ুন: রুহেল বিবাহিত, তাই সুনয়নার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে অমত বাবা রাকেশের ]
কোনটা টানল আপনাকে এই বিষয় নিয়ে ছবি করার জন্য? বৌদ্ধায়নের উত্তর, “যতই ১৯৭৯-র কথা ভাবি, আজকের দুনিয়াতেও এই বিষয়টা ভীষণ প্রাসঙ্গিক। আজকে ৪০ বছর বাদে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যেটা হচ্ছে বা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে রিফিউজিদের সঙ্গে যা ঘটছে, সেসব কি সেই ভয়ংকর দিনের থেকে খুব আলাদা কিছু? আমাদের স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এরকম গণহত্যা তো আর হয়নি! পৃথিবীকে জানাতে চাই সেই রক্তাক্ত ইতিহাসের কথা।” কিন্তু আজকের মানুষ কতটা ওয়াকিবহাল এই ঘটনা নিয়ে? “যখন এটা ঘটেছিল, আমার তখন ছ’বছর বয়স। কাজেই বুঝেছিলাম স্মৃতি মন্থন করে এই ছবি করতে পারব না। পড়াশোনা শুরু করি তখন থেকেই। কিন্তু লোকজনের সঙ্গে কথা বলে আমি খুব আশাহত। অনেকেই মরিচঝাঁপির নাম শোনেনি বা ভাসা ভাসা জ্ঞান। যাই হোক, আমি মনে করি পৃথিবীকে জানানো ফিল্মমেকার হিসেবে একটা দায়িত্বও আমার। আশা করছি ২০২০-র ফেব্রুয়ারি নাগাদ ফ্লোরে যেতে পারব। শীতকালের গল্প। সত্যিকারের শীতকালটাই ধরতে চাই আমি। কিছুদিন পরেই রেকি শুরু করব। কলকাতার অভিনেতারা যেমন থাকবেন মুম্বই থেকেও অ্যাক্টররা থাকবেন এই ছবিতে। কাস্টিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ১৯৭৯-র বাংলাদেশি দলিত নমশূদ্র মুখগুলো যেমন দেখতে ছিল সেই মুখ চাই আমার। চেহারায় একটা ক্ষয়িষ্ণু লুক, ক্লান্তি থাকতে হবে।” জানালেন পরিচালক।
এই ছবি বৌদ্ধায়নের ‘লিট্ল ল্যাম্ব’ এবং বিদেশি সংস্থার সহ-প্রযোজনায় হবে। সাদা-কালো হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে ম্যাসাকারের পর নদীর রক্তলাল স্রোতটাই দেখাতে চান বৌদ্ধায়ন। কাজেই কালার ট্রিটমেন্ট নিয়ে পরিচালক অন্যভাবে ভাবছেন নিশ্চিত করেই বলা যায়।
[ আরও পড়ুন: ধর্ষণে অভিযুক্ত আদিত্য পাঞ্চোলি, এফআইআর দায়ের মুম্বই পুলিশের ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.