সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত শুক্রবারই সাংসারিক মায়া বিসর্জন দিয়ে মহাকুম্ভে (Maha Kumbh 2025) সন্ন্যাসিনী হয়েছেন মমতা কুলকার্নি (Mamta Kulkarni)। জীবনের এই নতুন অধ্যায় শুরু করে আবেগপ্রবণ সলমন-শাহরুখের একসময়কার অভিনেত্রী। সন্ন্যাসিনী হওয়ার পর নতুন পদও পেয়েছেন ‘শ্রী যমাই মমতানন্দ গিরি’। মহামণ্ডলেশ্বর পদে বসিয়ে কিন্নর আখড়ার দায়িত্বও সঁপে দেওয়া হয়েছে তাঁর কাঁধে। সেই ইস্যু নিয়ে যখন বিনোদুনিয়ায় চর্চা নিরন্তর, তখন মহাকুম্ভে যোগ দিয়ে মমতার সন্ন্যাসগ্রহণ নিয়ে বিস্ফোরক বাবা রামদেব (Yog Guru Baba Ramdev)।
সোমবারই প্রয়াগরাজে পূণ্যস্নান সারেন রামদেব। এরপরই বলিউডের প্রাক্তন অভিনেত্রীকে মহামণ্ডলেশ্বর পদে নিয়োগ করার জন্য ক্ষোভ উগড়ে দেন যোগগুরু। তিনি বলেন, “একদিনে কেউ সন্ত হতে পারে না। এর জন্যে বছরের পর বছর ধরে সাধনা করতে হয়। আমাদের এই জায়গায় পৌঁছতে ৫০ বছর লেগে গিয়েছে। এটাকে সাধনা বলে। সাধুসন্ত হওয়া অনেক বড় বিষয়। মহামণ্ডলেশ্বর হওয়া তো আরও বড় ব্যাপার। আজকাল দেখছি, যার-তার ঘাড় ধরে নিয়ে এসে মহামণ্ডলেশ্বর বানিয়ে দিচ্ছে। এটা একেবারেই উচিত নয়।”
মহাকুম্ভে সন্ন্যাসীদের ভাইরাল রিলস ভিডিও দেখেও বেজায় চটেছেন বাবা রামদেব। মহাকুম্ভে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে যোগগুরু জানান, “কেউ কেউ আবার মহামণ্ডলেশ্বর হয়ে গেল এখানে এসে। যে কারও নামের আগে ‘বাবা’ জুড়ে দিচ্ছে। সাধুসন্তদের নানা ধর্মকর্মের রিলস ভিডিও মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। এগুলো ঠিক নয়। আসল কুম্ভ হল যেখানে মানবতা থেকে দেবত্বে, ঋষিত্বে, ব্রহ্মে আরোহণ করা হয়…। সনাতন ধর্মকে অনুভব করা। সনাতনে বাঁচা আর তাঁকে দিকে দিকে মানুষের মধ্যে প্রথিত করে দেওয়ার নামই সনাতন সাধনা। আর সেই সনাতন ধর্মের নামেই কয়েকজন ছ্যাঁচড়া, যা নয় তাই শব্দ ব্যবহার করে যাচ্ছে। সনাতন তো শাশ্বত। চিরন্তন সত্য।”
প্রসঙ্গত ২৪ জানুয়ারি কিন্নর আখড়ায় সেখানকার মহামন্ডলেশ্বর আচার্য লক্ষ্মী নারায়ণের সঙ্গে দেখা করেন মমতা কুলকার্নি। তাঁর হাত ধরেই জীবনের আধ্যাত্মিক ইনিংস শুরু করলেন। সন্ন্যাস নেওয়ার ফলে নিয়মানুযায়ী বদলে যায় বলিউডের একসময়কার হিট নায়িকা মমতা কুলকার্নির পরিচয়ও। দীর্ঘ ২৫ বছর ভারতে ছিলেন না মমতা। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। আর তার পরই প্রয়াগরাজে গিয়ে মহাকুম্ভে (Maha Kumbh 2025) যোগ দিয়ে সন্ন্যাস নিলেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই বলিপাড়ার প্রাক্তন অভিনেত্রীর এমন আচমকা সিদ্ধান্তে হতবাক হয়ে গিয়েছেন অনেকে। এপ্রসঙ্গে কী জানালেন সদ্য সন্ন্যাসিনী হওয়া মমতা? তাঁর কথায়, “শুনলাম, আমার এই সিদ্ধান্তে নাকি বেশ কজন সাধু-সন্তরা রেগে গিয়েছেন। অনেকে হয়তো চেয়েছিলেন যে আমি আবার বলিউডে যোগ দিই। তবে মহাকাল, মা কালীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে তো কিছুই হয় না। ওঁরাই পরমব্রহ্ম। ঈশ্বরের নির্দেশেই সন্ন্যাস গ্রহণ করেছি।” মমতানন্দ ওরফে মমতা কুলকার্নি জানিয়েছেন, ২০০০ সাল থেকে তিনি আধ্যাত্মিক পথে মন দিয়েছেন। বিগত ২৩ বছরে তাঁর সাধনা আরও কঠিন হয়েছে। আর সেটার ভিত্তিতেই তাঁকে এবার কিন্নর আখড়ার মন্ডলেশ্বর উপাধি দেওয়া হয়। যা কিনা বাবা রামদেব মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.