Advertisement
Advertisement
Ritwick Bhowmik

‘সত্যজিৎ রায়ের ছবি দেখে বড় হয়েছি’, রানাঘাটে আদিবাড়ি! জানেন ঋত্বিকের বং কানেকশন?

শাশ্বত-কন্যা হিয়া চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে বাংলা ছবিতে ঋত্বিক ভৌমিক।

Ritwick Bhowmik on his upcoming Bengali Film Mon Mane Na
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:May 16, 2025 5:24 pm
  • Updated:May 16, 2025 6:27 pm  

শম্পালী মৌলিক: এই মুহূর্তে তাঁর নাম ঘুরছে লোকের মুখে মুখে। সৌজন্যে ‘খাকি : দ‌্য বেঙ্গল চ‌্যাপ্টার’ এবং ‘বন্দিশ ব‌্যান্ডিটস’। তাঁর অভিনীত ‘সাগর’ তরঙ্গ তুলেছে মহিলা অনুরাগীদের মনে ইতিমধ্যে। সেই ঋত্বিক ভৌমিক এবার বাংলা ছবিতে ডেবিউ করতে চলেছেন। রাহুল মুখোপাধ‌্যায়ের ‘মন মানে না’ সিনেমায় শাশ্বত-কন‌্যা হিয়া চট্টোপাধ‌্যায়ের বিপরীতে থাকছেন তিনি। শুটিং শুরুর আগের দিন ‘দ‌্য ওয়েস্টিন’-এর এক্সিকিউটিভ লাউঞ্জে বসে আড্ডা দিলেন ‘পপকর্ন’-এর সঙ্গে।

ঋত্বিকের স্ট্রং বং কানেকশন দাদু-ঠাম্মার বাড়ি, সেই সূত্রে রানাঘাটে আসা-যাওয়া লেগে থাকত। গত বছরও কলকাতায় এসেছেন। এবার যাতায়াত বাড়বে অভিনেতা নিশ্চিত। কলকাতায় ফিরতে পেরে তিনি খুব খুশি “টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত হয়ে, ‘ব্লটিং পেপার’ হাউসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মনে হচ্ছে, এক্সটেনডেড পরিবার যেন,’ হেসে বললেন। ‘খাকি’র কো-অ‌্যাক্টর শাশ্বত চট্টোপাধ‌্যায় এবং তাঁর মেয়ে হিয়ার সঙ্গে এমনভাবে যোগসূত্র তৈরি হবে, ভাবেননি। বলেই ফেললেন, ‘সুররিয়‌্যাল লাগছে। ডেস্টিনি হয়তো। কয়েক মাস আগেই অপুদার সঙ্গে কাজ করেছি, এখন হিয়ার সঙ্গে কাজ করতে চলেছি। অপুদার সঙ্গে কাজ করে বুঝেছি কীরকম ভদ্র আর অমায়িক মানুষ! ঘরে ঢুকলেই যেন আনন্দ নিয়ে আসেন, তাঁর হাসি দিয়ে। হিয়াও মিষ্টি মেয়ে, সবসময় হাসে, কিছুটা সময় কাটিয়েই বুঝেছি। শি হ‌্যাজ দ‌্যাট ফ‌্যানটাসটিক কোয়ালিটি।’

Advertisement

হিন্দিতে কাজ করতে করতেই বাংলায় যোগ দিলেন ঋত্বিক। পরিচালক রাহুল মুখোপাধ‌্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ কীভাবে? “রাহুল আগে নীরজ পান্ডের সঙ্গে কাজ করেছে। ‘খাকি’ দেখার পর বলেছিল এই ছবিটা করতে চায়, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চেয়েছিল। ‘ফ্রাইডে ফিল্ম ওয়ার্কস’-এর দীপক স‌্যরকে যোগাযোগ করে। দীপক স‌্যরই বলেন যে, রাহুল ছবির জন‌্য যোগাযোগ করবে। এইভাবেই কথা হয়, প্রথমবার ভিডিও কলে। দারুণ মানুষ। স্টোরিটাও দেখলাম, পুরো লাভ স্টোরি। ওঁর সঙ্গে কথা বলার পর ‘কিশমিশ’, ‘দিলখুশ’-ও দেখলাম। খুব ভালো লেগেছিল। আধুনিক যুগের ভালোবাসার গল্প। তখন মনে হল ইনি প্রেমের ছবি খুব ভালো বানান। তারপর ‘মন মানে না’-র গল্প শুনি। বুঝে গিয়েছিলাম ছবিটা করব।” ঋত্বিকের জন্ম ঔরঙ্গাবাদে, মাইসোরে তারপর দু’বছর থাকা, তারপরে মুম্বই-বেঙ্গালুরু হয়ে আবার মুম্বই ফেরত। প্রবাসী বাঙালি হলেও নিজের ভিতরে বাংলাটা বাঁচিয়ে রেখেছেন তিনি। কীভাবে? ‘মা-বাবার জন‌্যই বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছি। ওঁরা সারাক্ষণ বাংলাতেই কথা বলেন। আমার বড়দিদি আর আমিও বাংলায় কথা বলি। ছোটবেলায় বাংলা ছবি দেখা হত। সে উত্তমকুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ‌্যায়, বা সত‌্যজিৎ রায়ের ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ কিংবা ‘ফেলুদা’ দেখে বড় হয়েছি। আর বেঙ্গালোরে যে স্কুলে পড়তাম অনেক ভাষা পড়ার সুযোগ ছিল। থার্ড ল‌্যাঙ্গোয়েজ বাংলা নিয়েছিলাম, মা-বাবা তাই চেয়েছিল। তারা সংস্কৃতিটা বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিল। বাংলা শিক্ষকও ছিল। তাই ভাষাটা লিখতে-পড়তে জানি। এখন মনে হয় মা-বাবা সব ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।”

‘বন্দিশ ব‌্যান্ডিটস’ আর ‘খাকি’-র পর জীবন তো থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি ঘুরে গেছে। কোনটা টার্নিং পয়েন্ট? “দুটোই অ‌্যাকচুয়ালি। প্রথম ‘বন্দিশ ব‌্যান্ডিটস’ আর ‘খাকি’-র মাঝে তিন-চার বছরের গ‌্যাপ আছে। প্রথমটার পরে লোকে আমাকে চিনতে শুরু করে। আর ‘খাকি’-র পর অন‌্য দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করে। যে আমি বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টাল চরিত্র করতে পারি। এ পর্যন্ত পাঁচ-ছটা প্রোজেক্ট করেছি, তার মধ্যে এই দুটো তাৎপর্যপূর্ণ।” পাঁচ বছরের এই কেরিয়ারগ্রাফ নিয়ে ঋত্বিক খুশি। আগে নাচ শিখেছেন, থিয়েটার করতেন, সহকারী পরিচালক হিসাবেও কাজ করেছেন, অ‌্যাক্টিং শুরু করে ছোট ছোট ভিডিও করতেন, অলস বসে থাকতেন না। বাড়িতে থাকলেও গল্প লিখতেন, ছবি দেখতেন, শর্ট ফিল্ম বানাতেন। প্ল‌্যান না থাকলেও ছোট থেকে অভিনেতা হতে চেয়েছেন। অভিনেতা হয়ে এরকম ছবি করবেন, এতটা প্রত‌্যাশা ছিল না। তাই যতটুকু পেয়েছেন মনে করেন ঈশ্বরের আশীর্বাদ।

মুম্বইয়ে কাজ করতে গিয়ে নিজেকে আউটসাইডার মনে হয়? “আমার তো প্রত্যেক জায়গায় আউটসাইডার মনে হয়। আমি একটা বাঙালি ছেলে, যে বেঙ্গালুরুতে বড় হয়েছি। সেখানে নর্থ ইন্ডিয়ার ভাবা হত আমাকে। বম্বেতে যারা জানত আমি বেঙ্গালুরুর তারা ভাবত, আমি সাউথ ইন্ডিয়ান, আবার যারা জানত আমি বাঙালি, তারা ভাবত আমি ইস্ট ইন্ডিয়ান। কলকাতায় আবার ধরে নিত প্রবাসী বাঙালি, সুতরাং অত বাংলা জানে কি না কে জানে। তো সব জায়গায় আউটসাইডার ভাবা হত, যে বেশি জানে না। তবে এটা সমস‌্যা করেনি। এটা আমাকে এগিয়ে দিয়েছে আরও কিছু করার দিকে, যাতে লোকে আমাকে গ্রহণ করতে পারে। এ জন‌্য সবাইকে ধন‌্যবাদ। বেঙ্গালুরু, বম্বেতেও আমাকে গ্রহণ করেছে। এখন কলকাতাও করে নেবে আশা করি।” ‘মন মানে না’-র শুটিং শুরু হয়ে গিয়েছে, একমাস চলবে। তার পরে নর্থ বেঙ্গলে শুটিং ‘ত্রিকোণ প্রেম’-এর ছবির। প্রধান চরিত্রে ঋত্বিক, সৌম‌্য মুখোপাধ‌্যায় এবং হিয়া চট্টোপাধ‌্যায়। তবে আরও অনেক সারপ্রাইজ থাকবে নিশ্চিত। প্রেমের ছবি করছেন, ঋত্বিক, জীবনে প্রেম নেই? প্রসঙ্গ তুলতেই হেসে বললেন, ‘নিশ্চয়ই আছে প্রেম, ঠিক সময় মতো বলব (জোরে হাসি)।’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement