সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাইরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। ভর সন্ধেয় লোডশেডিং। লন্ঠনের আলোয় কাঁথা মুড়ি দিয়ে গোল করে বসে ভাইবোনেরা। আষাঢ়ে গপ্পো জুড়েছে কোনও কাকা-জ্যাঠা। যে সে গল্প নয়, একেবারে ভূতের গল্প। কিঞ্চিৎ শব্দ হতেই.. প্রাণ যায় যায় চিৎকার- ওলো কে…???? শৈশবের নস্টালজিয়া। লীলা মজুমদার, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সেসব বাঙালি ভূতের গল্পমাখা দিনগুলো অতীতই বটে। ঠিক সেরকম নস্ট্যালজিয়াকে চাগাড় দিতেই পরিচালক সৌকর্য ঘোষাল ফেঁদে ফেললেন আদ্যোপান্ত এক বাঙালি ভূতের গল্প। ভূতের বায়োগ্রাফি বললেও ভুল হবে না বইকী! সেই গল্প নিয়েই প্রথমবার ভৌতিক ছবি তৈরি করতে চলেছেন সৌকর্য।
তা হঠাৎ ভূতুড়ে বায়োগ্রাফি কেন? আসলে গল্পখানাই যে সেরকম। পরিচালকের কথায়, এই গল্প সমনামবুলিজমে (ঘুমের মধ্যে হাঁটাচলা) আক্রান্ত এক বাচ্চা এবং এক মহিলা ভূতের। মহিলাটির মৃত্যু হয়েছে ১৯৪৭ সালে। হঠাৎই বাচ্চাটির সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। তবে এবারের প্রেক্ষাপটটা ২০১৯। সে এখন ‘ভূত পরী’। এই বাচ্চাটির সাহায্যেই সে জানতে পারে তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না, খুন হতে হয়েছে তাঁকে। এই খুদে গোয়েন্দার সাহায্যেই ‘ভূত পরী’ তাঁর মার্ডার মিস্ট্রির সমাধা ঘটায়। খুঁজে পায় তাঁর খুনিকে। কীভাবে? ঠিক এই বিষয়টিই সৌকর্যের ছবির উপজীব্য।
‘ভূত পরী’র চরিত্রে জয়া আহসান। বাচ্চাটির চরিত্রে দেখা যাবে বছর নয়ের এক পুঁচকেকে। নাম বিষান্তক মুখোপাধ্যায়। আরও তিন গুরুত্বপূ্র্ণ চরিত্রে রয়েছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী, সুদীপ্তা চক্রবর্তী এবং শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়। ‘ভূত পরী’তে ঋত্বিক এবং সুদীপ্তাকে কোন ভূমিকায় দেখা যাবে? এক চোরের ভূমিকায় থাকছেন ঋত্বিক। অন্যদিকে, ‘ভূত পরী’র রহস্যজনক খুনের কিনারা করা খুদে গোয়েন্দার মায়ের ভূমিকায় থাকছেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী। শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়কে দেখা যাবে এক সাধুর চরিত্রে।
সৌকর্যের কথায়, “বহুদিন থেকেই একটা ভূতুড়ে ছবি করার কথা ছিল। আসলে আমরা যে ধরনের হরর জঁরের ছবি এখন দেখি সেগুলো আমার কাছে পাশ্চাত্য-ঘেঁষা ঠেকে। একটা জীবিত মানুষের মধ্যে যেমন রাগ, অভিমান, দুঃখ কিংবা সততা থাকে, ঠিক সেরকমই একটা ভূতের জীবনী নিয়ে ‘ভূত পরী’। ভূতুড়ে ছবি নিয়ে সাধারণত একটা ধারণা রয়েছে যে হরর ঘরানা মানেই দুটো ভাগ। হয় তাঁর মধ্যে কৌতুকরস থাকবে নাহলে ভূত ভয় দেখায়। কিন্তু ভূতের মানবিক দিকটা কখনও দেখানো হয় না। সেখানেই ‘ভূত পরী’। একটু রহস্য, একটু ট্রেজার হান্ট সবই থাকছে ছবিতে।” এককথায় আদ্যোপান্ত বাঙালি ভূতের গল্প ‘ভূত পরী’।
বিষান্তককে খুঁজে পাওয়া গেল কী করে? মহাব্রতর ক্ষেত্রে যেরকম ক্রাইটেরিয়া ছিল এক্ষেত্রে অনেকটাই আলাদা। ৩-৪ মাসের খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে ‘ভূত পরী’ জয়ার সাগরেদকে পাওয়া গিয়েছে। বাঁশি বাজাতে জানা এক্ষেত্রে মাস্ট। তাই বিষান্তক যেহেতু বাঁশি বাজানো শেখে এবং ধরার টেকনিক জানে তাই ওকে পছন্দ হয়ে যায়। ফুড ফ্যান্টাসি ‘রেনবো জেলি’র পর এবার হরর ফ্যান্টাসিতে হাত দিচ্ছেন সৌকর্য ঘোষাল। মাঝখানে অবশ্য চন্দন রায় সান্যাল এবং কোয়েল মল্লিককে নিয়ে তৈরি করেছেন ‘রক্ত রহস্য’। ‘ভূত পরী’র শুটিং শুরু হচ্ছে ২৬ আগস্ট মানে আগামী সোমবার থেকে। বর্ধমান, সিউড়ি এবং কলকাতায় হবে শুটিং। ক্যামেরায় অলোক মাইতি এবং সম্পাদনায় অর্ঘ্যকমল মিত্র। প্রযোজনায় সুরিন্দর ফিল্মস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.