স্টাফ রিপোর্টার: ঠাকুরপুকুর কাণ্ডে (Thakurpukur Case) মূল অভিযুক্ত পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টোর গাড়ির সহযাত্রীদের ইতিমধ্যেই জেরা করা হয়েছে। এবার দুর্ঘটনার আগের রাতে পানশালার পার্টিতে তাঁদের সঙ্গে থাকা সঙ্গীদেরও লালবাজারের গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছেন বলে সূত্রের খবর। দুর্ঘটনার আগে অর্থাৎ ৫ মার্চ রাতে পানশালায় পার্টিতে তাঁদের সঙ্গে কারা ছিলেন? পানশালা থেকে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস তথা ভিক্টো ও তাঁর সঙ্গীরা কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন? জোকায় অভিনেতা আরিয়ানের বাড়ি থেকে ফেরার সময় তাঁর গাড়িতে অভিনেত্রী ঋ ও কার্যনির্বাহী প্রযোজক শ্রিয়া বসু ছাড়া আর কেউ উঠেছিলেন কি না, উঠলেও মাঝরাস্তায় তিনি বা তাঁরা কেউ নেমে গিয়েছিলেন কি না, তাও তদন্ত করে দেখছেন গোয়েন্দারা। সে জন্য আরিয়ানের বাড়ি থেকে দুর্ঘটনাস্থল পর্যন্ত রাস্তায় থাকা সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখছে পুলিশ। রাতে পানশালা থেকে বেরিয়ে আর যে সব রাস্তা দিয়ে তাঁরা গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন, সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
জেরায় ধৃত পরিচালক গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, এতটাই মদ্যপান করেছিলেন যে দিন আর রাতের তফাত বুঝতে পারেননি। মদ্যপ অবস্থায় দিনের বেলায় বাজারের রাস্তা রাতের মতোই ফাঁকা মনে করে গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়েন। পুলিশ সূত্রের খবর, সিদ্ধান্ত গোয়েন্দাদের কাছে দাবি করেন যে, ঠাকুরপুকুর বাজারের রাস্তাটি তাঁর কাছে খুবই পরিচিত। গভীর রাতে ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে প্রায়ই যাতায়াত করেন তিনি। কখনও রাত দুটো, আবার রাত তিনটের পরও তিনি ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু অত রাতে ঠাকুরপুকুর বাজার আর জনবহুল থাকে না। সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তা থাকে সম্পূর্ণ ফাঁকা। তাই শর্টকাট করার জন্য ওই বাজারের রাস্তাই ব্যবহার করেন তিনি। তখন ওই বাজারের মধ্যে দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগেও তিনি গাড়ি চালিয়েছেন। কিন্তু ফাঁকা রাস্তায় কোনও সমস্যা হয়নি।
তদন্তে উঠে এসেছে, দুর্ঘটনা যে দিন ঘটেছে তার আগের দিন রাতে প্রথমে দক্ষিণ কলকাতার একটি মলের পানশালায় মদ্যপান করেছিলেন তিনি। সেখান থেকে জোকায় অভিনেতা আরিয়ানের বাড়িতে গিয়ে ফের মদ্যপান করেছিলেন। রাতে পানশালা থেকে আর এক সঙ্গী তাঁর গাড়িতে উঠেছিলেন। তবে মদ্যপ ভিক্টোকে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাতে দেখে নেমে যান তিনি। কিন্তু ঋ ও শ্রিয়াকেও নেমে আসতে বলেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁরা এতটাই নেশায় বুঁদ ছিলেন যে তাঁদেরও কোনও হুঁশ ছিল না। পুলিশ ওই সঙ্গীকেও তলব করতে চলেছে বলে বিশেষ সূত্রে খবর। এই ঘটনায় পুলিশ ধৃত পরিচালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত করছে। এই মামলায় (Thakurpukur Case) গাড়িতে থাকা দুই সহযাত্রীকেও অভিযুক্ত করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। সে জন্য ঘটনার দিন প্রত্যাক্ষদর্শীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে পুলিশ। ঘটনার দিন বাজারে যাঁরা ছিলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সেই প্রত্যক্ষদর্শীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। দুর্ঘটনার পর গাড়ির সহযাত্রীদের ভূমিকা কী ছিল? তাঁরা কেমন অবস্থায় ছিলেন? তা জানতে প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.