সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নারীদেহ পুরোপুরি শুচি নয়! রজঃস্বলা কিংবা ঋতুমতীদের মন্দিরের চৌকাঠের ওপারে যাওয়ার কোনও অধিকার নেই। “নারী দেহ শুচি কিনা”, এই ট্যাবু বহু যুগ ধরে আমাদের সমাজে প্রচলিত। সমাজের সেই জগদ্দল পাথরের ভীত নড়াতেই এক অনন্য নারীকাহিনি নিয়ে আসছেন ‘শবরী’ ঋতাভরী চক্রবর্তী। ঋতুস্রাব নিয়ে আমাদের সমাজে প্রচলিত যাবতীয় কুসংস্কার এবং অজ্ঞতা দূর করতে সচেতন অভিযান চালাল ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ টিম। শহরের বুকে ছবির কলাকুশলীরা হাঁটলেন মৌন মিছিলে। পুরোভাগে ‘শবরী’ ঋতাভরী।
রাসবিহারির প্রিয়া সিনেমা হল থেকে মোতিলাল নেহেরু রোডের ত্রিধারা সম্মিলনী ক্লাব অবধি চলল অভিযান। ঋতুস্রাব নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে পথচলতি মানুষজনের হাতে বিলি করা হল হ্যান্ডবিল। ঋতাভরীর সঙ্গে দেখা গেল সোহম মজুমদার, সোমা মুখোপাধ্যায়। সত্যিই তো সময় এগোলেও ঋতুস্রাব নিয়ে কিন্তু আজও মানুষের মনে নানারকম কুসংস্কার রয়েছে। সেই সুবাদে ঈশ্বর সেবার ক্ষেত্রেও ব্রাত্য রাখা হয় নারীকে। অর্থাৎ পৌরহিত্যেও লিঙ্গভেদ। কারণ পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বিশ্বাস করা হয়, নারী দেহ পুরোপুরি শুচি নয়!
বিয়ের মণ্ডপেও মহিলা নন একজন পুরুষ পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন নারী-পুরুষ। সেটাই দেখা আসছি আমরা। কিন্তু ক’জন জানেন যে এই বিয়ের মন্ত্রের স্রষ্টা কিংবা রচয়িতা একজন মহিলা? সিকিভাগ মানুষ ছাড়া অনেকের কাছেই তা অজানা। যুগের পর যুগ ধরে একজন মহিলা পুরোহিতের লেখা মন্ত্র পড়েই বিবাহরীতি সম্পন্ন করেন একজন পুরুষ পুরোহিত।
ঋতুমতীদের নাকি মন্দিরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। অথচ, শ্রীরামকৃষ্ণের অনুমতিতে রজঋস্বলা অবস্থায় ঠাকুরের জন্য ভোগ রাঁধতেন, পুজোর জোগাড় করতেন। সত্যি তো যে দেহে জন্ম নেয় নতুন প্রাণ, তা কি কখনও অশুচি হতে পারে? যেখানে স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণ ঋতুস্রাব চলাকালীন সারদা মা’কে ভবতারিণীর ভোগ রান্না করার অনুমতি দিয়েছিলেন, সেখানে কিন্তু আজকের সমাজেও মাসিক চলাকালীন নারীদের বহু বাধা-নিষেধ রয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেন? সেই প্রশ্ন তুলেই আগামী নারী দিবসে প্রত্যেক মহিলাদের কুর্নিশ জানিয়ে আসছে ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’। যে গল্প আমাদের বাড়ি তথা সমাজের সব মেয়েদের বিশ্বাস করতে শেখাবে যে তাদের মধ্যেও এক ‘দশভুজা’ বিরাজমান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.