সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত-পাকিস্তান সংঘাত আবহে সরগরম নেটপাড়া। ‘দুষ্টু’ প্রতিবেশী দেশকে শায়েস্তা করতে যুদ্ধ চাইছে একাংশ। এমন আবহে দুই দেশের যুদ্ধ বিরতি নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় মিমের অন্ত নেই! ভারতীয়দের একাংশেরই এমন পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা জানিয়ে প্রায় ‘যুদ্ধ দুন্দুভি’ বাজিয়ে দেওয়ার জোগাড়! অনেকে প্রশ্নও তুলেছেন। ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে অনেকেই ক্ষুব্ধ। দেশের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে যারা যুদ্ধের হয়ে সওয়াল করেছিলেন, এবার সেসব নেটপাড়ার নীতিপুলিশদের কড়া কথা শোনালেন প্রাক্তন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ নারাভানে।
রবিবার পুনেতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নারাভানে জানান, নির্দেশ এলে তিনিও যুদ্ধে যাবেন, তবে কূটনীতির পথেই তিনি প্রথম হাঁটতে চান। প্রাক্তন সেনাপ্রধানের মন্তব্য, “একটা অশান্ত সপ্তাহ কাটল। যার শুরু হয়েছিল অপারেশন সিঁদুর দিয়ে। যেখানে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদী শিবিরগুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী। তারপরে চার দিন ধরে আকাশ ও স্থলপথে যুদ্ধ। শেষমেশ সামরিক অভিযান বন্ধের ঘোষণার মাধ্যমে এটা শেষ হল। তবে আমি আবারও বলে দিতে চাই যে, এটা কেবল সামরিক অভিযান বন্ধ, যুদ্ধবিরতি নয়।” এরপরই নারাভানের সংযোজন, “বেশ কয়েকজন সামরিক অভিযান স্থগিত করার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, এই যুদ্ধ বিরতি ঠিক না ভুল? এমন কৌতূহলও রয়েছে। এপ্রসঙ্গে আমি বলতে চাই, যুদ্ধ কোনও রোম্যান্টিক বিষয় নয়। কিংবা এটা আপনার ওই বলিউড সিনেমা নয়। যুদ্ধ বা হিংসার পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত দেওয়ালে একেবারে পিঠ ঠেকে গেলে, তবেই অবলম্বন করা উচিত। ঠিক যে কারণে আমাদের প্রদামন্ত্রী বলেছেন, এটা যুদ্ধের যুগ নয়। যদিও কিছু অজ্ঞ লোকেরা চাইছেন, আমাদের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে তবে আমি আবারও বলব, যুদ্ধ নিয়ে এত উল্লাস করা উচিত নয়।” নারাভানের মন্তব্যে সায় জানিয়েই ওয়াকিবহালমহল মনে করছে, “যুদ্ধ নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় যে রোম্যান্টিসিজম শুরু হয়েছে, সেটা সত্যিই বন্ধ হওয়া দরকার।”
প্রসঙ্গত, শনিবার বিকেলে ডোনাল্ড ট্রাম্পই প্রথম বিশ্বকে জানিয়েছিলেন ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতির কথা। সেই ট্রাম্পই রবিবার প্রস্তাব দেন দুই দেশের সঙ্গে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে কথা বলে সমাধান খোঁজার প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার। প্রসঙ্গত, বরাবরই আন্তর্জাতিক আঙিনায় ভারত জোরের সঙ্গে বলেছে কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর এই নিয়ে কোনও তৃতীয়পক্ষের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না। এদিন আবারও কড়া সুরে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিল দিল্লি। একইসঙ্গে পাকিস্তানের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল ও জঙ্গি হস্তান্তর নিয়েই শুধুমাত্র আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছে মোদি সরকার। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, যুদ্ধবিরতি হলেও সীমান্তের ওপার থেকে হামলা হলে উচিত জবাব দেবে সেনাবাহিনী। ইতিমধ্যে সীমান্তে সেনা কমান্ডারদের ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.