সন্দীপ চক্রবর্তী: বেলা ১১টা। সাধের ‘ভালো-বাসা’ থেকে চিরতরে বিদায় নিলেন সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেন। মা’কে বিদায় দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নবনীতা দেবসেনের দুই মেয়ে নন্দনা-অন্তরা। সেখান থেকে বেরিয়ে বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। চোখের জলে প্রিয় ‘নবনীতাদি’কে বিদায় দিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী থেকে অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা। এরপর সেখান থেকেই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে প্রয়াত সাহিত্যিকের মরদেহ যাবে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অ্যাকাডেমির উদ্দেশে।
বৃহস্পতিবার রাতেই নবনীতা দেবসেনের মৃত্যুর খবর শুনে তাঁর হিন্দুস্তান পার্কের বাড়ির সামনে পৌঁছে গিয়েছিলেন অনুরাগীরা। প্রিয় লেখিকাকে শেষবারের মতো ক্ষণিক চাক্ষুষ করার জন্য অধীর আগ্রহে বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু অনেককে ফিরতে হয়েছে ভগ্ন হৃদয়ে। কারণ, বাড়ির ভিতর ঢোকার অনুমতি পাননি কেউই। তবে, শুক্রবার সকালে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় সস্ত্রীক ‘ভালো-বাসা’য় পৌঁছন নবনীতা দেবসেনকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। শোকাহত রাজ্যপাল বলেন, “বাংলা সাহিত্যজগতের বিরাট ক্ষতি হল। গতকালই শুনেছি দুঃসংবাদ। তাই সকাল হতেই ‘ভালো-বাসা’য় চলে এলাম স্ত্রী’কে নিয়ে। ওঁর পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।”
রাজ্যপাল ছাড়াও শ্রীকান্ত আচার্য, কবি শঙ্ঘ ঘোষ, অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, লেখিকা তিলোত্তমা মজুমদার, লেখক শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বাংলা সাহিত্যজগতের বিশিষ্ট আরও অনেকেই শুক্রবার সকালে ‘ভালো-বাসা’য় গিয়েছিলেন সাহিত্যিকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশে। তাঁরা কথাও বলেন নবনীতার দুই মেয়ে অন্তরা এবং নন্দনা সেনের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার রাতে পরিবারের লোকেরা কাউকেই বাড়ির মধ্যে ঢোকার অনুমতি দেননি। কিন্তু কেন?
মেয়ে নন্দনার কথায়, “সেই সময় আমরা মা’কে একা পেতে চেয়েছিলাম। ওটা শুধু মায়ের আর আমাদের সময় ছিল।” বড় মেয়ে অন্তরা সেন বলেন, “বাবার সঙ্গে নিয়মিত কথা হত মায়ের। যদিও গত কয়েকদিন কথা হয়নি। কারণ, মা একটু অসুস্থ ছিলেন। রাজ্য সরকারের তরফেই মায়ের মরদেহ বাংলা অ্যাকাডেমিতে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।” কেওড়াতলা শ্মশানে সম্পন্ন হবে শেষকৃত্য।
ছবি- অরিজিৎ সাহা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.