সন্দীপ্তা ভঞ্জ: “আমি মানুষের স্বাধীনতা চাই/ আছি মানুষের বিপ্লবে তাই/ যতদূরে হোক না লড়াই আমি সংহতি জানাই”, আম জনতার পাশে দাঁড়িয়ে গাইছেন রূপম ইসলাম। দেশের নৈরাজ্য পরিস্থিতি নিয়ে সদা সরব গায়ক। তবে নিজস্ব ভঙ্গীতে। যে গানই এখন অনুরাগীদের প্রতিবাদী সুর হয়ে উঠেছে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (Citizenship Amendments Bill) নিয়ে সরগরম গোটা দেশ। যে আইনের বিরোধিতায় সরব হয়েছে গোটা দেশ। অসম, ত্রিপুরা, বাংলার পর অগ্লিগর্ভ দিল্লি। রাজপথে মাঝরাতে কান পাতলেও শোনা যাচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ। গগনভেদী স্লোগান- ‘No NRC’। এই অচলাবস্থায় এখন রূপম ইসলামের বাঁধা প্রতিবাদী গানই অনুরাগীদের আন্দোলনের সুর হয়ে উঠেছে। যে গানে শব্দে শব্দে তিনি ঠুকেছেন সরকার, প্রশাসনকে। গানের লিরিকসেই একতার কথা, সংহতির সুর। যদিও সোজাসুজি নয়, খানিক পরোক্ষভাবেই। “তুমি লেঠেল পাঠালে প্রশাসক, তুমি বশ্যতা চাও বিরোধীর… জেনে নাও সবাই নয় স্তাবক.. ওরা আগুন…”, গাইছেন রূপম। অনেক আগের গাওয়া হলেও আজকের জন্য এই গান প্রাসঙ্গিক। তাই বোধহয় ভক্তরা সেই গানই এখন শেয়ার করে NRC বিরোধী সুর তুলেছেন।
CAA নিয়ে রূপম ইসলাম কী বলছেন? “ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এমন কোনও আইন নিয়ে আসা অনুচিত, যা নির্দিষ্ট কয়েকটি ধর্মকে নাগরিকত্ব দেয় এবং একটি নির্দিষ্ট ধর্মকে বাদ দেয়। এটা আমাদের সংবিধান বিরুদ্ধে।“
অসমের কারফিউ, দক্ষিণ দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি, বাংলার একাধিক জেলায় স্তব্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। কার্যত প্রতিবাদে উত্তাল দেশ। CAA’র বিরোধিতা করে বাংলার বিশিষ্ট জনেরা সরব হয়েছেন। গোটা দেশজুড়ে যে পরিস্থিতির শিকার আম জনতা, তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন টলিউড থেকে বলিউডের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। জামিয়া কাণ্ডের প্রতিবাদে মুখ খুলেছেন অপর্ণা সেন, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, সৃজিত, স্বস্তিকা, পরমব্রত থেকে অনুপম রায়। এমতাবস্থায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে রূপমের সেই গানই শেয়ার করছে অনুরাগীরা। তাঁদের মত, সরকারের উপর প্রশ্ন তোলার অধিকার যে রয়েছে ছাত্রদের, সেকথা অনেক আগেই রূপমের গানের কথায়, সুরে ঝরে পড়েছে- “ছাত্ররা বাকস্বাধীনতা চায়, ওরা হাঁটে যুক্তির রাস্তায়।”
CAA’র জন্য দেশের একাধিক জায়গায় জারি হওয়া কারফিউয়ে উদ্বেগও ঝড়ে পড়েছে তাঁর কণ্ঠে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে যে আওয়াজ উঠেছিল, তা থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় লাঠিচার্জ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের ভিতর কাঁদানে গ্যাসও ছুঁড়েছে। আম জনতা থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সকলেই। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, এমনকী আন্তর্জাতিক স্তরের ছাত্রছাত্রীরাও, রাজপথে নেমেছেন প্রতিবাদে। রূপম গাইছেন- “ওহে আমার দেশের যুবদল, হও যুদ্ধে যুদ্ধে সবল।” আর তাই বোধহয় ভক্তরা প্রতিবাদের জন্য রূপমের সেই গানকেই বেছে নিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.