সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়: সম্প্রতি কলকাতার তৃপ্তি মিত্র সভাঘরে উপস্থাপিত হল কলকাতা আত্মিক প্রযোজিত ‘বাতিল চিঠি’ নাটকটি। প্রখ্যাত অভিনেত্রী গুলশনারার নির্দেশনায় এই নাটকটিতে একটা বড় ক্যানভাসে একটা হারিয়ে যাওয়া দশককে ধরা হয়েছে।
আধুনিক যুগে ব্যস্ততার মধ্যে আমাদের যে জীবনযাপন, তাতে আমাদের খুব চেনা কিছু অভ্যাস, কিছু ভাষা কখন যে হারিয়ে যাচ্ছে অর্থাৎ কখনও কিছু সংযোজিত হচ্ছে। যা আমরা দেখছি না, অথবা দেখতে পাচ্ছি না। কর্মক্ষেত্রে বন্ধু পালটাচ্ছে। পালটাচ্ছে সম্পর্ক, অর্থনীতি, রাজনৈতিক ইতিহাস ও পরিস্থিতি। আমরা শুধু সেই জার্নিটার মধ্যে রয়েছি। ভাবলেশহীন। হয়তো সবাই নয়। নির্দেশক গুলশানারা আমাদের ফেলে আসা সময়টাকে ছুঁয়ে এসেছেন অসামান্য নির্দেশনা এবং অভিনয়ে। সঙ্গে তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেছেন শ্রী শশী গুহ।
মৃত প্রেমিককে লেখা চিঠি এবং ফেলে আসা রাজনৈতিক ইতিহাস ছুঁয়ে ছুঁয়ে দর্শকের সামনে পরতে পরতে উঠে আসে কলকাতা শহরের কয়েক দশক। সুমনের গান, নন্দীগ্রামের গণহত্যার উত্তাল সময়, রিজওয়ানুর-প্রিয়াঙ্কার পরিণয় এবং রিজওয়ানুরের মৃত্যু। কলকাতার বৃষ্টি, মেঘলা আকাশ, শীতের রোদ্দুর- সমস্ত কিছু উঠে আসে দ্বৈত সত্ত্বার কথোপকথনে। আলাপচারিতায় ফিরে আসে তার পুরনো প্রেমিক তাতান। নাটকটির পরিবেশনায় আলো এবং সংগীতের ব্যবহার যথাযথ।
‘বাতিল চিঠি’ পরিবেশিত হয়েছে ইন্টিমেট থিয়েটারের ফর্মে। গুলশনারার এটি প্রথম নির্দেশনা। প্রথম নির্দেশনাতেই যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় রেখেছেন তিনি। আধুনিক সভ্যতার গতিময়তার মধ্যে চাপা পড়ে যাওয়া মানুষের ছোট ছোট অনুভূতিগুলো চিত্রনাট্যের মধ্যে উঠে এসেছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.