সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সতীশ গুজরাল, ভারতের অন্যতম খ্যাতনামা শিল্পী প্রয়াত হলেন। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ সন্ধেবেলা নিজের বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জনপ্রিয় এই শিল্পী। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৪। স্বনামধন্য শিল্পীর প্রয়াণে শোকের ছায়া সংস্কৃতিজগতে।
সতীশ গুজরাল, এক বহুমুখী প্রতিভার নাম। একাধারে তিনি যেমন ক্যানভাসে তুলির টানে মুগ্ধ করেছিলেন হাজারো শিল্পমনস্কদের, ঠিক তেমনই তাঁর হাতে সৃষ্টি করা ভাস্কর্য তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল খ্যাতির চূড়ায়। আবার কখনও বা কলমও ধরেছিলেন লেখালেখির জন্য। অনুপ্রেরণা পেয়োছিলেন ফইজ আহমেদ ফইজ এবং মির্জা গালিবের লেখা থেকে। একথা একাধিকবার নানা সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেও বলেছিলেন। চিত্রকর, ভাস্বর, লেখক কী ছিলেন না! এমন বহু গুণের অধিকারী ছিলেন সতীশ গুজরাল। কবিতার প্রতি তাঁর ভালবাসাও উল্লেখ করার মতো। সংস্কৃতিজগতে সতীশ ঘনিষ্ঠদের মুখে একাধিকবার শোনাও গিয়েছে যে, কবিতার প্রতি সতীশের প্রেম ছিল দেখার মতো। একটা সময়ে সেরামিক এবং টেরাকোটায় নকশা কাটা কিংবা অঙ্কনেও তাঁর জুড়ি মেলা ছিল ভার!
ভারতীয় সংস্কৃতিজগতে তাঁর অপরিসীম অবদানের জন্য পদ্ম ভূষণেও ভূষিত হয়েছিলেন সতীশ গুজরাল। যাঁর ঝুলিতে পুরস্কারের সংখ্যাও নেহাত কম ছিল না। যিনি কিনা ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আইকে গুজরালের নিজের ভাই ছিলেন। যদিও খুব কম সময়ের জন্যই আইকে গুজরাল দেশের প্রধানমন্ত্রীত্বের পদে ছিলেন। ১৯২৫ সালে লাহোরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সতীশ। দেশভাগের ভয়ংকর অস্থির পরিস্থিতি দেখেছেন নিজের চোখে। ছিন্নমূল, বাস্তুহারাদের যন্ত্রণাও ভাবিয়ে তুলেছিল সতীশকে। যার প্রভাব পরবর্তীকালে তাঁর বহু শিল্পের মধ্যেও দেখা গিয়েছে। পরে লাহোর থেকে সোজা শিমলায় চলে আসেন। নিজেকে পুরোপুরি ডুবিয়ে দেন পেইন্টিংয়ের কাজে। সেসময়ই তাঁর ক্যানভাসে ফুটে উঠল, ‘ম্যানস ক্রুয়েলিটি টু ম্যান’ (মানুষের প্রতি মানুষের হিংসা)।
১৯৫০ সাল নাগাদ ডেভিড সিক্যুইরোজ এবং ডিয়েগো রিভেরার (খ্যাতনামা মেক্সিকান শিল্পী তথা ফ্রিডা কাহলোর স্বামী) ত্বত্তাবধানে শিক্ষানবীশ ছিলেন। তাঁদের কাজে অনুপ্রেরিত হয়ে সেরামিক এবং টেরাকোটায় ডিজাইন করার করার কাজ শুরু করেছিলেন। সেই জনপ্রিয় শিল্পীর প্রয়াণেই শোকপ্রকাশ করেছেন সংস্কৃতিপ্রেমীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.