সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মৌলবাদের কঠোর সমালোচনা, নিজ ধর্মের অন্ধকার দিকগুলি তুলে ধরে একের পর এক সাহিত্যকর্ম, পর্দাপ্রথার আড়ালে কট্টরপন্থীদের নগ্ন রূপ প্রকাশ্যে এনে ধর্মের গোঁড়ামিতে আঘাত করা- এসব মিলেমিশেই তসলিমা নাসরিন এক বলিষ্ঠ, দৃঢ় চরিত্র। আর তাতেই সাহিত্যের প্রতি তাঁর একনিষ্ঠ জীবনে এসেছে নানা অবমাননা, লাঞ্ছনা, তৈরি হয়েছে বিতর্কের পাহাড়। সম্প্রতি বঙ্গ রাজনীতিতে তিনি বেশ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন লেখিকা। কলকাতা থেকে একদা ‘বিতাড়িত’ তসলিমাকে ফের শহরে ফেরাতে তৎপর হয়ে উঠেছে বিজেপি। গত মার্চেই রাজ্যসভায় তা নিয়ে বক্তব্য পেশ করেছেন বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। এপ্রসঙ্গে তাঁকে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন তসলিমা খোদ। এবার শমীকের আবেদনে সাড়া দিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতের যে কোনও প্রান্তে নির্ধিদ্বায় যেতে পারেন তসলিমা নাসরিন।
শুক্রবার বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিংয়ের তরফে শমীক ভট্টাচার্যের কাছে যে চিঠি পৌঁছেছে, তাতে উল্লেখ, “আপনার উদ্বেগ সম্পর্কে আমরা অবগত। তসলিমা নাসরিনকে যে ভারতীয় ভিসা দেওয়া হয়েছে, বর্তমান বিধির শর্ত মেনে উনি ভারতের যে কোনও স্থানে যেতে পারেন।” বিগত প্রায় দু’দশক ধরে নিজের মাতৃভূমি বাংলাদেশে ঢুকতে পারেননি তসলিমা নাসরিন। অহরহ লেখিকার সোশাল মিডিয়ায় সেই ক্ষোভ ঝড়ে পড়ে। এবার ভারত-পাক সংঘাতের আবহে যখন বাংলাদেশের একাংশের সুর পাকপন্থী, তখন এমতাবস্থায় তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের এহেন চিঠি বেশ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহলমহল। সেই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, লেখিকা কি আর কলকাতায় ফিরবেন? সেপ্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখও খুলেছেন তসলিমা নাসরিন।
তসলিমা জানিয়েছেন, “রেসিডেন্ট পারমিট হোক বা ভিসা, আমাকে যেটা দেওয়া হয়েছে তাতে আমি রাজস্থান, ওড়িশা, তামিলনাড়ু থেকে কেরল সবজায়গায় যাচ্ছি। আর কলকাতায় কি আমার যেতে ইচ্ছে করে না? কলকাতা বইমেলায় আমার বই বেরয়। পাঠকরা কেনেন। তাঁদের মাঝে গিয়ে দু’ দণ্ড সময় কাটাতে ইচ্ছে করে। কিন্তু আমি গেলে যদি কোনওরকম অশান্তির সৃষ্টি হয়, সেই আশঙ্কাতেই যাই না। আমার জন্য কোথাও অশান্তি হোক, চাই না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.