নির্মল ধর: কলকাতার পাঁচতারা হোটেল জে ডব্লিউ ম্যারিয়টে (JW Marriott) (থুড়ি চ্যারিয়ট) জনৈক সন্ত্রাসবাদী আফতাব আনসারির নেতৃত্বে আধডজন ‘জিহাদি’ ঢুকে পড়েছে মুম্বই হামলার বদলা নিতে। আফতাবের আরও একটা উদ্দেশ্য রয়েছে। স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের লিডার জাকিরকেও (রহমান নাকি আহমেদ?) নিকেশ করা। ছবির প্রযোজক এবং পরিচালক – দু’জনকেই ধন্যবাদ। কারণ এই ছবি দেখার সুযোগে পাঁচতারা হোটেলের ঝলমলে অন্দর, বাহির, রান্নাঘর থেকে পেছনের লুকোনো সিঁড়ি — প্রায় সব অজানা তথ্য জানা হয়ে যাবে আম দর্শকের! কীভাবে আফতাবের অভিযান ব্যর্থ হয়? জাকির প্রায় একক নেতৃত্বে পুরো উগ্রপন্থী দলটাকে কীভাবে কাবু করে? তা নিয়েই পুরো অ্যাকশনধর্মী আখ্যান ও চিত্রনাট্য। না, এ ছবিতে সেই অর্থে নায়ক-নায়িকার রোম্যান্স নেই, নেই রোমাঞ্চ, আছে শুধু অ্যাকশন, বন্দুকবাজির কান ঝালাপালা করা আওয়াজ।
হ্যাঁ, শুধুই মারপিট আর দাঙ্গাবাজি দেখতে যাঁরা ভালবাসেন, তাদের কাছে ‘SOS কলকাতা’ (SOS Kolkata) দর্শনীয় হতেই পারে! কিন্তু প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে পুজোর বাজারে এমন আনন্দ ক’জন চাইবেন? ছবির পরিচালক অংশুমান প্রত্যুষ অবশ্য প্রেম-পিরিতি না রাখলেও বাবা ও মেয়ের সম্পর্কের আবেগ ও প্রয়াত স্ত্রীর(মিমি) উপস্থিতির ঝলক দিয়ে দর্শক সেন্টিমেন্টকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন। অ্যাকশন দেখানোর ব্যাপারে এই ছবিতে নুসরত (Nusrat Jahan) কম যাননি। কিক বক্সিং, কুংফু, বন্দুক চালানো থেকে সংকেত চিহ্ন উদ্ধারেও তিনি দুঁদে গোয়েন্দাকে হার মানিয়েছেন। ছবির সিনেম্যাটোগ্রাফার এবং এডিটরের প্রশংসা অবশ্যই করতে হবে হলিউডি ঘরানার না হলেও, বলিউডি কাজের সঙ্গে টক্কর দেবার মত ছবির টেকনিক্যাল কাজ। এটা মানতেই হচ্ছে।
আর অভিনয় বলতে তো শুধু ‘অ্যাকশন’! সেটা যশ দাশগুপ্ত (Yash Dasgupta) একাই সামলেছেন। আফতাবের চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন তাঁকে চেহারা ও পোশাকে বেশ ভালই মানিয়েছে এবং অভিনয়টাও করেছেন। মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty) আদতে অতিথি চরিত্রের মতই। সুন্দর পোশাকে সেজেগুজে সুখের স্মৃতি উসকে দেবার কাজটুকু করেছেন মাত্র। হ্যাঁ, গান আছে বৈকি কিন্তু সেগুলো কোন কম্মে লেগেছে বলে মনে হল না। এ ছবিতে মনে হওয়ার চাইতে চোখে দেখার কাজটাই বেশি। সেখানে কোনও চোখের পাতা পরার কোনো সুযোগই রাখেননি ‘বুদ্ধিমান’ পরিচালক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.