অনিন্দ্য সেনগুপ্ত: “Never forget who you are. The rest of the world will not. Wear it like armour.” — টিরিয়ান ল্যান্নিস্টার। ক্যাপ্টেন স্পার্ক নন, প্রখর রুদ্র নন, ফেলুদা নন, বিবাহিত, কিন্তু ব্যোমকেশও নন। লালমোহনবাবু বিবাহিত হলে যেমন হত, একেন অনেকটা সেরকম। এমনকী দু’জনের এমন সাদৃশ্য যে একই অভিনেতা দুটো ভূমিকাই পালন করেন। এত প্রতিকূলতা পেরিয়ে কী করে তাহলে সুজন দাশগুপ্তর ‘একেন’ বাঙালির মনে প্রবেশ করছেন? আমার মতে একেন জানেন একেন কে, আর তাই দর্শকও চিনতে পারে তাকে, বুঝতে পারে তাকে।
‘দ্য একেন: বেনারসে বিভীষিকা’ যখন দেখতে বসলাম, আমার ঠিক সামনের সারিতে দুটো বাচ্চা ছিল। এখনও কৈশোরে পৌঁছয়নি। শিশুই। প্রবাদের তারা কী বোঝে? কিন্তু একেনবাবুর ভুল প্রবাদ তাদের খিলখিলিয়ে হাসিয়ে তুলছে। হয়তো আমরা, প্রাপ্ত বয়স্করা, ‘ ডিসবিলিফে ‘ এতটাই ভুগি যে শিশুদের ‘উইলিং সাসপেনশন’ আমাদের ক্যানসেল করে দিয়েছে। কিন্তু একেনকে আপনি ক্যানসেল করতে পারবেন না। কিছু কিছু জায়গায় যুক্তির অভাব রয়েছে। খটকা লাগে। কিন্তু মজাও লাগে। একেন তো দাবি করেননি যে, উনি যুক্তি ফটাবেন। উনি পেশাদার গোয়েন্দা হলেও ওঁর মূল কাজ, আমার মতে, আমাদের সামনে তুলে ধরা যে আমরা সবাই আসলে খুবই সাধারণ, অন্য সবার মতোই। একই সঙ্গে আমরা সবাই অন্য সবার চেয়ে অসাধারণ। আবার সবাই, কোনও না কোনওভাবে খুবই হাস্যকর।
মোটের ওপর কেমন দেখতে লাগছে, কত সুন্দর ফুটিয়ে তুলেছে কাশীকে বা ব্যর্থ হয়েছে, কে কত ভালো অভিনয় করেছেন বা করেননি। লম্বা লেগেছে না ছোট লেগেছে, কে আর কী করতে পারতেন বা পারতেন না, এই সমগ্র বিষয় আমার ব্যাক্তিগত মতের পুরো বিশ্লেষণ এই লেখাটির উদ্যেশ্য নয়। উদ্দেশ্য হল, এটা স্বীকার করা যে, খামতি সত্ত্বেও একেনবাবু, প্রমথ এবং বাপির সঙ্গে বেড়াতে আমার মন্দ লাগেনি। তার ওপর ঘোষাল বাড়ির পর, কাশীতে আরেক বাঙালি পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে খারাপ লাগবে না আপনাদেরও, এটুকু হলফ করে বলতে পারি। তাদের পরিবারও আমার মতে বেশ ইন্টারেস্টিং। সবশেষে বলি, ‘বেনারসে বিভীষিকা’ দেখার পর ‘এক মিনিট’ ভাববেন। মনে হতেই পারে এখনও পর্যন্ত, এটা সেরা ‘একেন’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.