Advertisement
Advertisement
Sunflower

বিশাল জমিতে সূর্যমুখী চাষ, শিক্ষকের বাড়িতে বিশ্বভারতীর পড়ুয়া ও পর্যটকদের ভিড়

পরিবেশবান্ধব পৃথিবী গড়ে তুলতে এই উদ্য়োগ শিক্ষকের।

A teacher cultivate sunflower
Published by: Sayani Sen
  • Posted:May 14, 2025 6:10 pm
  • Updated:May 14, 2025 6:10 pm  

দেব গোস্বামী, বোলপুর: ফুলের উপত্যকা পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষীরাই হয়, তবে সূর্যমুখী ফুলের সমাহারে সেজে উঠেছে শান্তিনিকেতনের অ্যান্ড্রুজপল্লি। আর ওই সুর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়া-সহ পর্যটকেরা। তুলছেন সেলফিও। লাভের আশায় নয়, পরিবেশবান্ধব হওয়ার সচেতনতায় ও কৃষকদের উৎসাহ দিতেই কাকুটিয়া একলব্য মডেল আবাসিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুপ্রিয়কুমার সাধুর এই উদ্যোগ।

বিশ্বভারতীতেই কৃষি নিয়ে গবেষণা করেছেন সুপ্রিয়কুমার সাধু। কর্মজীবনে শিক্ষকতার পাশাপাশি সুপ্রিয়বাবু সাইকেল নিয়ে গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে মানুষকে পরিবেশবান্ধব হওয়ার জন্য সচেতন করে চলেছেন। পরিবেশ রক্ষার একজন আন্দোলনকারী হিসাবেই পরিচিত বোলপুর সুরুলের বাসিন্দা সুপ্রিয়কুমার সাধু। তিনি বলেন, “সূর্যমুখী ফুল চাষ করে লাভবান হব এই আশায় নয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এই ভাবনা। ফুলের টানে নিয়মিত আসছেন শান্তিনিকেতনের বাসিন্দা, পড়ুয়া-সহ অনেকেই। উপভোগ করছেন শুধু সূর্যমুখী ফুল নয়, টিয়াপাখির কলতানও। কারণ, টিয়াপাখির অত্যন্ত প্রিয় সূর্যমুখীর বীজ। তাতেই আনন্দিত।”

Advertisement

সুপ্রিয়বাবু তিনটি ভাগে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। প্রত্যেকটি ভাগে প্রায় ১২ থেকে ১৪ কাঠা জমির উপর এই চাষ করা হয়েছে। প্রথম ভাগে যে চাষ করা হয় সেই ফুল বর্তমানে ঝরে গিয়েছে। এখন যে বাগানে ফুল ফুটে রয়েছে সেটি দ্বিতীয় ভাগ। অন্যদিকে এই বাগানের ফুল ঝরে পড়লেও তৃতীয় ভাগের বাগানে ফুল ফুটে উঠতে শুরু করেছে। শান্তিনিকেতনের বাসিন্দা মৌটুসি মুখোপাধ্যায় ও উত্তম রায় বলেন, ”ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতেই এসেছি। বাড়তি পাওনা টিয়াপাখির কলরব। কচিকাঁচা থেকে সকলেই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। সেলফি তুলে ক্যামেরাবন্দি করছেন অনেকেই। পরিবেশ কর্মী তথা শিক্ষকের উদ্যোগ অভিনব।” দুবরাজপুরের চাষি নীলরতন ধারা ও বোলপুরের সইফুউদ্দিন মোল্লা বলেন, “সূর্যমুখী প্রধানত দুই ধরনের হয়। কিরণী ও বারি সূর্যমুখী। জেলায় সাধারণত বারি সূর্যমুখীর চাষ বেশি হয়। যে কোনও মাটিতেই সূর্যমুখী চাষ হয়ে থাকে। তবে, দোআঁশ মাটিতে সবচেয়ে ভালো হয় সূর্যমুখী ফলন। চারা রোপণ থেকে পূর্ণাঙ্গ ফুল হওয়া পর্যন্ত সময় লাগে ৯০ থেকে ১১০ দিন। প্রতি ফুলে ৪০০-৬০০টি বীজ হয়। প্রত্যেকটি সূর্যমুখী বীজ থেকে শতকরা ৪০ শতাংশ তেল পাওয়া যায়।”

বর্তমানে সূর্যমুখী ফুল চাষ করে লাভের স্বপ্ন দেখেছেন জেলার কৃষকেরা। স্বল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় গত কয়েক বছর ধরেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সূর্যমুখী ফুলের চাষ বেড়েছে। বর্তমানে খয়রাশোল, দুবরাজপুর, ইলামবাজার, লাভপুর, বোলপুর-সহ একাধিক এলাকায় সূর্যমুখী ফুলের চাহিদা বেড়েছে। বোলপুরের কৃষি দপ্তরের আধিকারিক শেখ জসীমউদ্দিন বলেন, “সুপ্রিয়কুমার সাধু একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছেন। অপরদিকে কৃষকদেরও সূর্যমুখী চাষের জন্য উৎসাহিত করছেন।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement