শঙ্করকুমার রায়: সুলভ সবজি ঝিঙে। সহজ পাচ্য তরকারি। ঝিঙে দু’রকমের। তেতো ও মিষ্টি। ফলে বছরভর ক্রেতামহলে এর চাহিদা রয়েছে। এবার জৈব সারে খাদ্যগুণে ভরা সতেজ ঝিঙে চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে বিশেষভাবে উদ্যোগী উত্তর দিনাজপুর উদ্যান পালন দপ্তর। ঝিঙে চাষ করে যাতে কৃষকরা বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারেন, সে বিষয়ে বিশেষভাবে তৎপর সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
ইটাহারের কেউটাল এবং রায়গঞ্জের হাতিয়া ও রূপাহার গৌরী পঞ্চায়েতের বিভিন্ন জমিতে প্রচুর ঝিঙে চাষ করা হচ্ছে। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে আদর্শ জৈব সারে ঝিঙের মতো বর্ষা মরসুমের সুস্বাদু সবজি উৎপাদন করে রীতিমতো চমকে দিয়েছেন রায়গঞ্জ ও ইটাহারের সুদীপ মুখোপাধ্যায়, চিন্ময় দাস, মৌসুমী বসাক, বিজয় বর্মন, মনোময় দাস, লিপি বসাক, তপন বর্মন।
জেলা উদ্যান পালন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বর্ষা মরসুমে ঝিঙের চাহিদা রীতিমতো তুঙ্গে। এক বিঘা জমিতে প্রথম ধাপে ২০-২৫ কিলো দিয়ে ফলন ফলানো শুরু হয়। তারপর ধাপে ধাপে প্রায় দেড় কুইন্টাল ঝিঙে উৎপাদন সম্ভব। এক বিঘা জমিতে আর্দশ জৈব সারে এই সবজি উৎপাদন করতে ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। উত্তর দিনাজপুর উদ্যান পালন দপ্তরের জেলা আধিকারিক দীপক সরকার জানান, ‘‘দুই প্রজাতির ঝিঙে চাষে বর্ষা মরসুমে উৎসাহী কৃষকদের আর্থিক সহযোগিতা করা হয়।’’
মে-জুন মাসে মূলত ঝিঙে চাষের উপযুক্ত সময়। লতানো জাতীয় আনাজ চাষ করা হয় এমন জমিই ঝিঙে চাষের জন্য আদর্শ। এক বিঘা জমিতে ৫০-৬০ লিটার তরল জৈব সার প্রয়োজন। ২৫-৩০ দিনের মাথায় ঝিঙে গাছে ফুল আসতে শুরু করবে। সাত দিনের মধ্যে ফল ধরা শুরু হবে। এরপর কীটনাশক হিসাবে নিম তেল ছড়িয়ে দিতে হবে গাছের পাতায় এবং ফলে। ঝিঙে গাছে পোকার উপদ্রব দমন করতে এক বিঘা জমির চারটি কেন্দ্রে ‘ফিরোমেন ট্রাপ’ অর্থাৎ ফল ছিদ্রকারী পতঙ্গ আকৃষ্ট করতে ফাঁদ বসাতে হবে। তাতে পোকা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
খাদ্য বিশেষজ্ঞ ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের মতে, ঝিঙের উপকার অনেক। কুষ্ঠ ও অর্শ রোগে ভীষণ উপকারী। তেতো ঝিঙে বেটে শরীরের ফোলা অংশে প্রলেপ লাগালে দ্রুত ফোলা কমে যায়। কৃমি, কফ প্রভৃতি রোগেও ঝিঙের ব্যবহারে উপকার মেলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.