রাজা দাস, বালুরঘাট: রাসায়নিক নয়, জৈব সার প্রয়োগ করে চলছে সবজি চাষ। বালুরঘাট ব্লকের জলঘর গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গাসাগর ও চকহরিণা এলাকায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে জৈব সার দিয়ে সবজি চাষ। এর জন্য কৃষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে কৃষি দপ্তর থেকে। এই সার প্রয়োগ করে কৃষি কাজে লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা। পার্শ্ববর্তী গ্রামেও জৈব সার প্রয়োগ করে কৃষি কাজ করার পক্রিয়া শুরু হয়েছে।
কম সময়ে ফসল উৎপাদনে রাসায়নিক সার প্রয়োগ চরম মাত্রা নিয়েছে। ধান, পাট থেকে অনান্য যে কোনো সবজি চাষে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ স্বাভাবিক প্রথায় পরিণত হয়েছে। ফলে নানা রোগ জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। পাশাপাশি জমির স্বাভাবিক প্রকৃতি নষ্ট হয়ে কমতে থাকে ফলনও। অবশেষে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কৃষি দপ্তরের উদ্যোগে জৈব সার প্রয়োগে কৃষি কাজের প্রশিক্ষণ নেন কয়েকজন কৃষক। ২০১৬ সাল থেকে প্রথমে ১০ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করা হয় জৈব সার প্রয়োগে কৃষি কাজ। পরবর্তীতে এই পদ্ধতিতে চাষ শুরু হয়েছে জলঘর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় কেঁচো সার, সরিষার খৈল, গোবর, নিম খৈল ইত্যাদি। ফসলে পোকার উপদ্রব হলে কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয় নিম তেল। মাটি তৈরি করতে ব্যবহার করা হচ্ছে লাঙল। এতে ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি অনেকটাই রোগ, পোকার উপদ্রব কমে। তুলনামূলক বেশি দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে জৈব সার প্রয়োগে উৎপাদিত সবজি ও অন্যান্য ফসল। ফলে অনেকটাই বেশী লাভের মুখ দেখছে বালুরঘাট ব্লকের জলঘর গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গাসাগর, চকহরিনা এলাকার কৃষকরা। পাশের গ্রামগুলিও একই পদ্ধতি অবলম্বন করে চাষবাস শুরু করেছে।
জৈব সার প্রয়োগকারী কৃষক পরিমল মণ্ডল জানান, জেলা কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাদের। একটা সময় রাসায়নিক সার ব্যবহার করতেন কৃষিকাজে। রাসায়নিক সার প্রয়োগের ফলে কমতে শুরু করে ফলন। এমনকি ফসলে রোগ পোকামাকরের উপদ্রব বাড়তে শুরু করে। অবশেষে তারা জৈব সার প্রয়োগে কৃষিকাজ শুরু করেন। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে ১০ হেক্টর ও পরে ১২ হেক্টর জমিতে তারা চাষবাস শুরু করেন। জৈব সার প্রয়োগের ফলে কৃষিজ শস্যের ফলন বাড়ছে। লাভের মুখ দেখছেন তারা। আশেপাশের গ্রামে শুরু হয়েছে জৈব সার প্রয়োগে কৃষিকাজ।
জেলা কৃষি আধিকারিক জ্যোতির্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘‘জৈব সার প্রয়োগে কৃষি কাজের জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ থেকে সবরকম সাহায্য করা হচ্ছে। জৈব সারে কৃষিকাজের গুরুত্ব ও তার উপকারিতা তুলে ধরা হচ্ছে কৃষকদের কাছে।’’ জেলার সর্বত্র যাতে এই চাষ শুরু করা যায় কৃষি দপ্তরের তরফে সে প্রচেষ্টাও চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.