Advertisement
Advertisement
Bombai Litchi

খামখেয়ালি আবহাওয়ায় উধাও বোম্বে লিচু, মন ভালো নেই ফলপ্রেমীদের

বিকল্প ফল উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা।

Bombai litchi is disappear from market
Published by: Sayani Sen
  • Posted:May 19, 2025 8:54 am
  • Updated:May 19, 2025 8:54 am  

দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: রাজ্যে যে পরিমাণ লিচুর চাহিদা থাকে তার বেশিরভাগটাই জোগান দেন বারুইপুর ও তার আশপাশ এলাকা চাষিরা। কিন্তু বিগত কয়েক বছর যাবৎ দেখা দিয়েছে সমস্যা। তেমনভাবে ফলন হচ্ছে না লিচুর। আর লিচুর ফলন না হওয়ার জন্য বাজারে ঘাটতি দেখা দিয়েছে বাঙালির এই প্রিয় ফলের। সমস্যা মেটাতে বিকল্প অন্য ফল চাষের পেশা বেছে নিচ্ছেন ফলচাষিরা। বারুইপুরের কল্যাণপুর, ধবধবি, শিখর, বালি, শংকরপুর, বেলেগাছি, মোদারহাট, হাটদহ, বিন্দাখালি ও ফুলতল-সহ বিভিন্ন এলাকায় লিচু চাষ করে থাকেন চাষিরা। মূলত আদি গঙ্গার উর্বর মাটিতে যুগ যুগ ধরে লিচুগাছগুলিতে ফলন হয়ে আসছে। একেকটি লিচুগাছ প্রায় ১০০ বছরও অধিক সময় ধরে ফলন দিচ্ছে। কিন্তু ইদানীং দেখা দিয়েছে সমস্যা। লিচুগাছগুলিতে সেইভবে ফলন হচ্ছে না। মূলত আমফান ঝড়ের সময় থেকেই দেখা দিয়েছে সমস্যা। কারণ সেই সময় বারুইপুরে প্রচুর লিচুগাছ আমফান ঝড়ের প্রকোপে ভেঙে পড়েছিল অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

যা লিচুগাছ অবশিষ্ট ছিল তার অধিকাংশই আবার লিচু না হওয়ার কারণে গাছ কেটে বিক্রি করে দিচ্ছেন চাষিরা। সেই বাগানে লাগানো হচ্ছে স্বল্প দিনে ফল আসবে, এমন জামরুল, আম, গোলাপজাম-সহ অন্যান্য ফলের চারা। কল্যাণপুরের ফলচাষি আবু তালেব মোল্লা, হোসেন শেখ, প্রলয় মণ্ডল, জলধর সাঁপুইরা বলেন, শীতের সময় প্রবল কুয়াশা লিচু গাছের সবথেকে বেশি ক্ষতি করেছে। অতিরিক্ত কুয়াশার কারণে ঝরে পড়েছে মুকুল। আর সেই কারণেই লিচুগাছে সেইভাবে ফলন হচ্ছে না। একটি পূর্ণবয়স্ক গাছ থেকে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ কেজি লিচু পাওয়ার কথা। কিন্তু গত দু-তিন বছর ধরে দেখা যাচ্ছে সেই গাছ থেকে লিচু মিলছে ১০০ কেজির কাছাকাছি। অর্থাৎ ফলনের এই ঘাটতি হওয়ার কারণেই একদিকে যেমন লিচুর দাম বাড়ছে অন্যদিকে তেমনি লিচুচাষে উৎসাহ হারাচ্ছেন চাষিরা। শুধু তাই নয় লিচুচাষ যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ এবং খরচসাপেক্ষ। লিচুর ফলন হওয়ার পর সেই ফলন টিকিয়ে রাখতে গিয়ে বিভিন্ন ওষুধ স্প্রে করতে হয়, তাছাড়া পাখির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য জাল টাঙাতে হয়। সবমিলিয়ে এই ঝুঁকিপূর্ণ লিচুচাষে তেমন লাভ নেই। আর তাই চাষিরা বিকল্প ফল উৎপাদনের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন।

Advertisement

মূলত বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি থেকে বাজারে আসতে শুরু করে গোলা লিচু। গোলা লিচুর সপ্তাহখানেক পরেই বাজারে আসে বারুইপুরের বিখ্যাত বোম্বে লিচু। টুকটুকে লাল এবং মোটা শাঁসে ভরা রসালো এই লিচুর চাহিদা সারা ভারতবর্ষে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন রাজ্যগুলিতে যেমন পৌঁছে যেত লিচু তেমনি যেত দিল্লি, বেঙ্গালুরু, মুম্বই-সহ বড় বড় শহরগুলিতে। এমনকী উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে ভালই চাহিদা ছিল এই লিচুর। শুধু তাই নয় সৌদি আরবেও রপ্তানি হত বারুইপুরের বোম্বে লিচু। এবছর ফলন যথেষ্টই কম। আর ফলন কম থাকার জন্য লিচু প্রায় ২০০ টাকা কেজি খুচরো বাজারে। জেলার এক কৃষি আধিকারিক বলেন, সমস্যাটা দু’বছর ধরে চলছে। মূলত খামখেয়ালি আবহাওয়ার কারণেই লিচু চাষে ফলন ও উৎপাদন দুটোই কমেছে। এই ফল নিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে আরও বেশি সময়োপযোগী করে তোলা যায়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement