সব্যসাচী ভট্টাচার্য: মাটির ব্যবহার নেই। পাইপের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত জল ধারা। আর পাইপ ফুটো করে তার মধ্যে বসানো লেটুস, অরিগানো, পাকচইয়ের মতো স্যালাডের প্রয়োজনীয় শাকসবজি। ভিন্ন ধারার এই কৃষিপদ্ধতি প্রয়োগ করে রীতিমতো সাফল্য মিলেছে শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ির রতনজোতে এই পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেছেন কিরণ কুমার। জলপাইগুড়ি ৭৩ মোড় এলাকাতেও এই চাষে ভাল সাফল্য মিলেছে। উত্তরবঙ্গে এই পদ্ধতিতে চাষ নিয়ে কৃষকদের উৎসাহ ও পরামর্শ দিয়ে আসছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিভাগের অধীন সেন্টার ফর ফ্লোরিকালচার অ্যান্ড অ্যাগ্রি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট।
অ্যাকোয়াপনিকসে বড় চৌবাচ্চায় পর্যাপ্ত জল রেখে তার মধ্যে মাগুর মাছ ছেড়ে দেওয়া হয়। মাগুর মাছের মল জলের সঙ্গে মেশে। এই জলই চাষের প্রধান উপকরণ। জলে মেশা মাছের মলে থাকা অ্যামোনিয়া ব্যাকটিরিয়ার সংস্পর্শে প্রথমে নাইট্রাইট পরে নাইট্রেটে রূপান্তরিত হয়। এই নাইট্রেটকে গাছ তার শিকড় দিয়ে গ্রহণ করতে পারে। এরপর সাবমার্সিবল পাম্প দিয়ে এই জল পাইপের মধ্যে দিয়ে চালনা করা হয়। পাইপের গায়ে দুই থেকে আড়াই ইঞ্চি ব্যাসের ছোট ছোট ফুটো করা হয়। এই ফুটোতেই ছোটো প্লাস্টিক পটের মধ্যে ক্লে বল দিয়ে গাছের চারা বসিয়ে দেওয়া হয়। জলের থেকে গাছ তার প্রয়োজনীয় আহার গ্রহণ করে পুষ্ট হয়ে ওঠে।
এই পদ্ধতিতে সাধারণত পুদিনা, ধনেপাতা, স্ট্রবেরি, লেটুস, আইসবার্গ লেটুস ও অরিগানোর মতো সবজির চাষ করা সম্ভব। পাইপের জল ফের চৌবাচ্চায় এনে রাখা হয়। সেখানে থার্মোকলের বোর্ড দিয়ে চৌবাচ্চাটি ঢাকা দিয়ে তার উপর ফুটো করে তার মধ্যে একই পদ্ধতিতে গাছের চারা বসানো হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে ক্যাপসিকামের মতো অপেক্ষাকৃত বড় সবজির চাষও সম্ভব। হাইড্রোপনিকস ব্যবস্থায় পুকুরের জায়গায় বড় প্লাস্টিক ড্রামকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সেখানে আলাদা করে জলে দ্রবণীয় সার মেশানো হয়। পদ্ধতি অবশ্য গোটাটাই একরকম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.