মলয় কুণ্ডু: নোনা জল ঢুকে নষ্ট হওয়া জমিতে এবার ব্যাপক ফলন হল ‘নোনা স্বর্ণ’ ধানের। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বা যশ আছড়ে পড়ায় রাজ্যের কৃষি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশ কয়েকটি জেলায়। বিশেষ করে উপকূলবর্তী জেলাগুলির বিভিন্ন এলাকায় চাষের জমিতে সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে পড়ে। ফলে নষ্ট হয়ে যায় ফসল। নোনা জলের জেরে চাষের মাটি লবণাক্ত হয়ে পড়ে। যে মাটিতে চাষ করা সম্ভব নয়।
এমন অবস্থায় চাষিদের আর্থিকভাবে সাহায্য করে রাজ্য সরকার। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, শুধু আর্থিক সাহায্য নয়, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের এমন ধানের বীজ দেওয়া হবে, যা নোনা মাটিতেও উৎপন্ন হবে। সেইমতো প্রশাসনের তরফে চাষিদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নোনা ধানের বীজ ‘নোনা স্বর্ণ’।
জুন মাসের ১৭ তারিখ নবান্ন সভাগৃহে মুখ্যমন্ত্রী নতুন কৃষকবন্ধু অনুষ্ঠানে এই বীজ তুলে দেন। উত্তর ২৪ পরগনার প্রায় ২ লক্ষ বিঘা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী ব্লকগুলিতে নোনা স্বর্ণ তুলে দেওয়া হয়। প্রত্যেক চাষির হাতে বিঘাপ্রতি ৬ কিলোগ্রাম বীজ এবং তার সঙ্গে জিঙ্ক ও বীজ পরীক্ষার রাসায়নিকও দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ১২২০ মেট্রিক টন নোনা স্বর্ণর বীজ দেওয়া হয়। অবস্থা সামাল দিতে উপকূলবর্তী এলাকার ১৮৪০ কমিউনিটি নার্সারি থেকে ‘কমিউনিটি সিডবেড’ বা বীজতলা তৈরি করে দেওয়া হয়।
সঠিক সময়ে মুখ্যমন্ত্রী এই পদক্ষেপ করার কয়েক মাসের মধ্যেই এই নোনা স্বর্ণর বীজ থেকে ব্যাপক ফলন হয় সুন্দরবন এলাকায়। উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদেও ব্যাপক ফলন হয়েছে বলে খবর। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, রাজ্যের কৃষিবিজ্ঞানীরা স্থানীয়ভাবে এই ধরনের বীজ তৈরি করেছেন, যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে জমি নোনাজলে নষ্ট হলেও ধান চাষ করা যায়। বীজ দেওয়ার পাশাপাশি চাষিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেন বিজ্ঞানীরা। সেইমতো নোনা মাটিতেও ধান চাষে দেশের মধ্যে নজির তৈরি করছে রাজ্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.