সুকুমার সরকার, ঢাকা: পদ্মা (Padma) তীরবর্তী এলাকায় চাষাবাদের খ্যাতি তো আছেই। কিন্তু বিশ্বজুড়ে পদ্মার খ্যাতি ইলিশের জন্য। যিনি একবার পদ্মার ইলিশ খেয়েছেন তিনি আর ওই স্বাদ ভুলতে পারবেন না। এজন্যই পদ্মার ইলিশের বিশ্বজুড়ে ব্যাপক খ্যাতি। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দক্ষিণ প্রান্তে ২৬ কিলোমিটার এলাকায় বয়ে গিয়েছে পদ্মা নদী।পদ্মার জল কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চরে শুরু হয়েছে সবজি চাষ। জেগে ওঠা চরের জমিতে ও বাড়ির আঙিনায় এই সবজি চাষ করা হচ্ছে। এই সবজি স্থানীয়ভাবে চাহিদাপূরণের পাশাপাশি পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। পদ্মার তীরে সবজি চাষে বিপ্লব।
পদ্মার মাঝেই চকরাজাপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের ১৫টি চরে স্থায়ীভাবে সাড়ে তিন হাজার পরিবার বসবাস করেন। লোকসংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এবারের বন্যা ও নদীভাঙনের সময় তাঁরা এক চর থেকে আরেক চরে চলে গিয়েছেন। পুনরায় জল কমে গেলে অনেকেই নতুন করে ঘরবাড়ি নির্মাণের পর বসবাসও শুরু করেছেন। এই চরের মধ্যে চকরাজাপুর, পলাশি ফতেপুর, দাদপুর, কালীদাসখালি, কলিগ্রাম, টিকটিকিপাড়া, করারি নওসারা, সরেরহাট, চাঁদপুর, চৌমাদিয়া চরে আলু, বেগুন, টমেটো, কফি, লাউ, মিষ্টি কুমড়ো, শিম, করোলা, পুঁই ও লালশাক-সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি বাড়ির উঠোনের পাশাপাশি জেগে ওঠা চরে চাষ হয়। পিঁয়াজ, রসুন, গম, ছোলা, মুসুর, আখ, সরষে ও বাদামও ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে।
চকরাজাপুর চরের আম্বিয়া বেগম বলেন, “আমার বসবাসের জমি ছাড়া আর কিছু নেই। বন্যায় বাড়িতে জল উঠেছিল। জল নেমে যাওয়ার পর বাড়ির পাশ দিয়ে কাঠা দুয়েক জমির উপর লাউ চাষ করেছি। ইতিমধ্যে তিন হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। আরও যে পরিমাণ লাউ আছে, দেড়-দুই হাজার টাকায় বিক্রি হবে। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন লাউ বিক্রি করতে হয়। বিক্রি করতে কোনও অসুবিধা হয় না। পাশে চকরাজাপুর বাজার। আবার কোনো কোনো সময়ে বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যান ক্রেতারা।” চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল আজম জানান, একসময় পদ্মার চরের জমিতে শুধু ধান, গম আর আখ চাষ করা হত। কিন্তু এখন আম, পেয়ারা, কলা-সহ নানা রকম সবজি চাষ হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লা সুলতান জানান, চরের জমি খুবই উর্বর। এ চরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যে কোনো ফসল বেশি ফলে। তাতে আর্থিক উন্নতিও হবে স্থানীয়দের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.