শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: জলদি আলুচাষ শুরু হয়েছে। কিন্তু সার অমিল হওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ চাষিদের। আলুচাষিদের অভিযোগ, আলুচাষের আদর্শ সার হল সুফলা ১০:২৬:২৬। সেই সারই মিলছে না বাজারে। যদিও-বা মিলছে তা কিনতে হচ্ছে চড়া দাম দিয়ে বলে অভিযোগ। ফলে আলুচাষের খরচ বেড়েছে অনেক বেশি। যদিও কৃষি দপ্তরের পরামর্শ, আলুচাষের জন্য ১০:২৬:২৬ সুফলা সার কিনতে হবে এমন কোনও কথা নেই। তার পরিবর্তে বিকল্প সার বাজারে এসে গিয়েছে। সেই সারেই আলুচাষ করা যেতে পারে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কৃষি দপ্তরের ঘাটালের সহকারি কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) শ্যামাপদ সাঁতরা জানিয়েছেন, ‘‘আলুচাষের জন্য ১০:২৬:২৬ সার প্রয়োগ করতে হবে এমন কোনও কথা নেই। সুফলা সার বাজারে আর না-ও মিলতে পারে। তার জন্য বিকল্প সার হিসাবে অনেক সারই এসে গিয়েছে বাজারে। সেই সার প্রয়োগ করলেও আলুর ফলনে কোনও হেরফের হবে না। এর জন্য কৃষি দপ্তর থেকে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আসলে চাষিদের পুরনো অভ্যাস বদল করতে সময় লাগবে।’’ আমন ধান মাঠ থেকে ঘরে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই আলুচাষ শুরু করে দিয়েছেন চাষিরা। জলদি জাতের পোখরাজ আলুচাষ করতে মাঠে নেমে পড়েছেন আলুচাষিরা। ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোনা, ক্ষীরপাই, ঝাঁকরা, পলাশচাবড়ি থেকে শুরু করে গড়বেতা, গোয়ালতোড়, কেশপুর প্রভৃতি এলাকায় জলদি জাতের পোখরাজ আলুচাষ করা শুরু হয়ে গিয়েছে। আলুচাষের প্রধান সারই হল সুফলা ১০:২৬:২৬ ও ডাইঅ্যামোনিয়াম ফসফেট বা ডিএপি। আলুচাষিদের অভিযোগ, দুই সারই বাজারে অমিল। যদিও বা মিলছে, তা কিনতে হচ্ছে অত্যন্ত চড়া দামে। চাষিদের আরও অভিযোগ, সরকারি নির্ধারিত সুফলা সারের ব্যাগ প্রতি (৫০ কেজি) ১৪৭০ টাকার বদলে কিনতে হচ্ছে ২২০০ থেকে ২৪০০ টাকার মধ্যে। তাও প্রয়োজনমতো মিলছে না বাজারে।
ঘাটালের দ্বন্দ্বিপুর গ্রামের আলুচাষি সন্দীপ মণ্ডল, দিলীপ বক্সি, সুকুমার সাঁতরা বলেন, ‘‘আলু চাষের আদর্শ সুষম সার হল সুফলা ১০:২৬:২৬ ও ডিএপি। কিন্তু বাজারে ডিএপি সার মোটামুটি মিললেও সুফলা সার মিলছে না। যদিও বা মিলছে তা কিনতে হচ্ছে চড়া দাম দিয়ে। তাও আবার প্রয়োজন মতো মিলছে না। বেশি দামে সার কেনার ফলে আলুচাষের খরচ বেড়েছে অনেক বেশি। বিঘা পিছু ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা খরচ হতে চলেছে। যেখানে আগে ছিল ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার মধ্যে। আমাদের দাবি সরকারি মূল্যে সুফলা সারের ব্যবস্থা করুক সরকার।’’
জানা গিয়েছে, এরপরই শুরু হবে জ্যোতি ও চন্দ্রমুখী আলুচাষের মরশুম। এদিকে, কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, সুফলা সারের পরিবর্তে ২০:২০:০:১৩, ১৪:২৮:০, ১৬:২০:০:১৩, ১৪:৩৫:১৪, প্রভৃতি সার বাজারে এখন সহজলভ্য। ঘাটালের সহকারী কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) শ্যামাপদ সাঁতরা বলেন, ‘‘এই সমস্ত সার প্রয়োগ করলে ফলনের কোনও হেরফের হবে না। আমরা আলুচাষিদের সেই পরামর্শ দিচ্ছি।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.