Advertisement
Advertisement
Siliguri

শীতে বৃষ্টি নেই, রোগ পোকার আক্রমণে বিপাকে পাহাড়ের চা শিল্প

উৎপাদন কমার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

tea industry is in trouble due to attack of diseases and insects in Siliguri

ফাইল ছবি।

Published by: Suhrid Das
  • Posted:February 19, 2025 5:23 pm
  • Updated:February 19, 2025 5:31 pm  

স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: শীতে বৃষ্টি নেই। হঠাৎ বাড়ছে দিনের তাপমাত্রা। সেই সঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে রোগ, পোকার সংক্রমণ। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে উত্তরের চা শিল্প।  শীতের বিদায় বেলাতেও সমতলে বৃষ্টি নেই। প্রায় চার মাস অনাবৃষ্টির পরিস্থিতি দেখে রীতিমতো উদ্বিগ্ন চা গবেষণা কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ মহল। শঙ্কা, এবার যে শুধু ভালো মানের চা পাতা মিলবে না, সেটাই নয়। মার্চ মাস থেকে সেচের জলেও টান পড়তে পারে। সেই ধাক্কায় কমতে পারে উৎপাদন।

ডুয়ার্সের টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রতি বছর ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে উত্তরে পাহাড়-সমতলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়ে থাকে। ফেব্রুয়ারি থেকে ঠান্ডার প্রকোপ কমতে থাকে। এবার নভেম্বর থেকে সমতলে বৃষ্টি নেই। তার উপর শীত দেরীতে এসেছে। ফিরছেও দেরিতে। কুয়াশার দাপটও কমছে না। সব মিলিয়ে চা উৎপাদনের প্রতিকূল আবহাওয়া দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাস থেকে চা গাছ ছেঁটে দেওয়ার কাজ চলে। এরপর বৃষ্টির ছোঁয়া মিলতে দুটি পাতার কুশি চলে আসে।

Advertisement

এবার গাছ ছেঁটে ফেলা হলেও বৃষ্টি না মেলায় দুটি পাতার কুশি আসছে না। সময় লাগছে। অথচ কাগজে কলমে ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে পাতা তোলার মরশুম শুরু হয়েছে। চা গবেষকরা জানান, ভালো মানের চা পাতা উৎপাদনের জন্য যেমন ঝলমলে রোদের লম্বা দিন প্রয়োজন। একইভাবে প্রয়োজন বৃষ্টি। সেটা শুধুমাত্র মরশুমের শুরুর পাতা উৎপাদনের জন্য নয়। মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত সেচের জলের জোগানের জন্য বিশেষভাবে দরকার।

এদিকে শীতের শেষে দিনের তাপমাত্রা বাড়তে চা বাগানে রেড স্পাইডার, লুপার, লাল পোকা, গ্রিন ফ্লাই অর্থাৎ সবুজ মাছি, চা মশার উপদ্রব বেড়েছে। ওই কারণে আরও বিপদ বেড়েছে। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “এবার ফেব্রুয়ারিতে পাতা মিলবে না। মার্চে কিছু পাতা উঠলেও পরের মাসগুলো সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।” তিনি জানান, গত বছর ফার্স্ট এবং সেকেন্ড ফ্ল্যাশ মার খেয়েছে। অতিবর্ষণের জন্য বর্ষাকালীন উৎপাদন উদ্বেগজনক ভাবে কমেছে। এবার শীতে এখনও বৃষ্টি নেই। এটা খুবই উদ্বেগের।

চা চাষিদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন যে পাতা ওঠার কথা সেটাই ‘ফার্স্ট ফ্লাস’। অর্থাৎ মরশুমের প্রথম চা পাতা। দু’মাস পাতা তোলার কাজ চলে। কিন্তু এবার কী হবে, কেউ বুঝতে পারছেন না। কারণ, গাছের বৃদ্ধির জন্য যে রোদ ও বৃষ্টি প্রয়োজন সেটা মিলছে না। অথচ, ফার্স্ট ফ্লাসের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কারণ, এই সময় যে পাতা হয়, সেটার কেজি প্রতি দাম ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা থাকে।

চা শিল্পপতি পূরণজিৎ বক্সী গুপ্ত জানান, আবহাওয়ার এই পরিস্থিতি চললে পাতার উৎপাদন ৩০ শতাংশের বেশি কমতে পারে। সেটা হলে খুবই খারাপ পরিস্থিতি হবে। গত বছর শীতের মরশুমে আবহাওয়ার খামখেয়ালির জন্য কাঁচা চা পাতা উৎপাদন তেমন না হওয়ায় উত্তরে ২১৫ টি বটলিফ কারখানার মধ্যে অর্ধেক খোলেনি। নর্থবেঙ্গল টি প্রডিউসার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি সতীশ মিত্রুকা জানান, গত বছর মরশুমের শুরুতে কারখানা খুলে পাতার জন্য বসে থাকতে হয়েছে। এবারও একই পরিস্থিতি হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement