সৌরভ মাজি, বর্ধমান: গত আট বছরে রাজ্যে কৃষি ক্ষেত্রে যন্ত্রায়নে বিপ্লব ঘটে গিয়েছে। আধুনিক যন্ত্রের বহুল ব্যবহার শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই যন্ত্র চালনার এবং রক্ষণাবেক্ষণে প্রশিক্ষিত কারিগরের অভাব। ফলে বাইরে থেকে চালক ও মিস্ত্রি ভাড়া করতে প্রচুর খরচ পড়ে যাচ্ছিল। এবার রাজ্যে প্রথমবার কৃষি যন্ত্র চালনার ও কৃষি যন্ত্র মেরামতের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু হচ্ছে বর্ধমানের মাটিতীর্থ কৃষিকথা প্রাঙ্গণে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার শনিবার বর্ধমানের মাটি তীর্থ কৃষি কথা প্রাঙ্গণ পরিদর্শনে আসেন। তিনি জানান, রাজ্যে প্রথম তো বটেই সম্ভবত দেশে প্রথম এই ধরনের সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রথম গড়ে উঠছে এখানে। সামনের মাসে এই প্রাঙ্গণে মাটি উৎসবের উদ্বোধনে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সূচনা করতে পারেন বলেও এদিন ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রদীপবাবু। তিনি বলেন, “১০০ দিনের প্রকল্পে দেশের মধ্যে সব থেকে কর্মদিবস আমাদের রাজ্যে হয়। ফলে গ্রামীণ এলাকায় কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে। তাই কৃষিতে যন্ত্রায়ণ ঘটানো হয়েছে। গত তিনবছরে বহুল ব্যবহার শুরু হয়েছে যন্ত্রের। কিন্তু সেই সব আধুনিক যন্ত্র চালনার প্রশিক্ষিত চালকের অভাব রয়েছে রাজ্যে। আবার সেই যন্ত্র সারানোর প্রশিক্ষিতেরও অভাব রয়েছে। তাই মাটি তীর্থ প্রাঙ্গণেই দেশের প্রথম এই ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প এই মাটি তীর্থ কৃষিকথা প্রাঙ্গণ। বর্ধমানের কালনা রোডের ধারে কৃষি খামারে গড়ে উঠেছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বর্ধমান কৃষি মহাবিদ্যালয়। তারই পাশে বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে মাটি তীর্থ কৃষি কথা প্রাঙ্গণ। সেখানেই প্রতি বছর নিয়ম করে শীতকালে আয়োজিত হয় মাটি উৎসব। মূলত কৃষি ও তার সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে প্রদর্শনী, প্রশিক্ষণ ও উন্নত প্রযুক্তির বিষয়ে কৃষকদের সম্যক ধারণা দেওয়ার লক্ষ্যে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। সামনের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে মাটি উৎসব হওয়ার কথা। এদিন তারই প্রস্তুতি দেখতে এসেছিলেন প্রদীপবাবু। তিনি ছাড়াও ছিলেন জেলাশাসক বিজয় ভারতী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু প্রমুখ।
প্রদীপবাবু জানান, মাটি তীর্থ প্রাঙ্গণের ভিতরের রাস্তাগুলি চওড়া করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন যে সব স্টল রয়েছে সেগুলি স্থায়ী করারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তার জন্য ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের সঙ্গে বিভিন্ন দপ্তরের সংযুক্তিকরণ করে কাজ করা হচ্ছে। মাটি উৎসবের এই সংস্কারের কাজে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে প্রায় ১৮ হাজার কর্মদিবস সৃষ্টি হবে বলেও প্রদীপবাবু জানান। এই এলাকায় বর্ধমান-১ ব্লকের রায়ান-১ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। সেখানকার ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আধিকারিকরাও ছিলেন এদিনের পরিদর্শনের সময়। তাঁদের প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছে প্রদীপবাবু। তিনি জানান, রাস্তা চওড়া করা, ভাল নিকাশি ব্যবস্থা রাখা, পুকুর খনন, ২০টি স্টলের সংস্কার করা-সহ বিভিন্ন কাজ খুব তাড়াতাড়ি করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.