সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে দেশজুড়ে ভরাডুবি কংগ্রেসের। গতবারের থেকে মাত্র ৮টি আসন বেশি পেয়ে ৫২-এ শেষ করেছে দ্য গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি। এবার সংসদের নিম্নকক্ষে প্রধান বিরোধী দলের তকমা ধরে রাখাও চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে গিয়েছে শতাব্দী প্রাচীন দলের। হিন্দিবলয় থেকে একেবারে নিশ্চিন্হ হওয়ার মুখে কংগ্রেস। আরও বড় ধাক্কা, খোদ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী তিনবারের জেতা কেন্দ্র আমেঠিতে হেরেছেন। এই জায়গায় দলের মনোবল চাঙ্গা করাই যখন প্রধান লক্ষ্য কার্যকরী কমিটির, সেখানে আরও বড় চিন্তা দলের হেভিওয়েট নেতাদের পরাজয়। একাধিক শীর্ষ নেতা ধরাশায়ী হয়েছেন। সবচেয়ে বড় বিষয়, ৯ জন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবার লোকসভায় ভাগ্য পরীক্ষায় নেমেছিলেন। প্রত্যেকেই পরাজয়ের মুখ দেখেছেন। এই প্রতিবেদনে রইল সেই তালিকা।
১. শীলা দীক্ষিত- তিনবারের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লিতে ২০১০ সালে কমনওয়েলথ গেমসের অন্যতম সংগঠকের ভূমিকায় ছিলেন। দিল্লি উত্তর-পূর্ব আসনে বিজেপির তারকা প্রার্থী মনোজ তিওয়ারির কাছে ৩ লাখের বেশি ভোটে হেরেছেন। ফের হয়তো আগামী বছর দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে দেখা যেতে পারে এই পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদকে।
২. ভুপিন্দর সিং হুডা- হরিয়ানায় কংগ্রেসের অন্যতম মুখ। ২০০৫ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এবার সোনিপত থেকে বিজেপির বিদায়ী সাংসদ রমেশ চন্দের কৌশিকের কাছে ১,৬৪,৮৬৪ ভোটে হেরেছেন।
৩. হরিশে রাওয়াত- উত্তরাখণ্ডের একদা কংগ্রেসের স্তম্ভ। কিন্তু গত কয়েক বছর সময়টা ভাল যায়নি তাঁর। ২০১৭ সালে বিধানসভা ভোটে হারের পর অসমে কংগ্রেসের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। সেখানেও ব্যর্থ তিনি। নৈনিতালের উধম সিং নগর থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে বিজেপির অজয় ভাটের কাছে হেরে যান তিনি। এহেন হারে রাজনৈতিক কেরিয়ার প্রশ্নের মুখে বলা যায়।
৪. দিগ্বিজয় সিং- মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ভোপাল কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করে বিতর্কিত সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরকে। ৩.৬ লক্ষ ভোটে হেরে যান দিগ্বিজয়।
৫. বীরাপ্পা মইলি- প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এবার চিক্কাবাল্লাপুর কেন্দ্রে বিজেপির বিএন বাচেগৌড়ার কাছে বিপুল ভোটে হারেন তিনি। ইন্দিরা গান্ধীর জমানার এই কংগ্রেস নেতার এবার রাজনৈতিক অস্তিত্ব সংকটে।
৬. সুশীলকুমার শিণ্ডে- এবারই শেষবারের মতো লোকসভা নির্বাচনে লড়বেন বলে জানিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শেষটা ভাল হল না তাঁর। বিজেপির স্বামী জয়সিদ্দেশ্বরের কাছে সোলাপুর হার মানলেন সুশীলকুমার।
৭. অশোক চহ্বন- আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মহারাষ্ট্রের। নিজের গড় নান্দেদ কেন্দ্র থেকে হেরে যান তিনি। ব্যবধান কম হলেও ভাগ্য সাথ দিল না অশোক চহ্বনের।
৮. নাবাম টুকি- অরুণাচল প্রদেশের দুবারের মুখ্যমন্ত্রী হার মানলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির হেভিওয়েট প্রার্থী কিরেন রিজিজুর কাছে। ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার তিনদিনের মধ্যে সরকার ভেঙে যায় অরুণাচলে। দলীয় কোন্দলকেই তার জন্য দায়ী করেছিলেন টুকি। রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়।
৯. মুকুল সাংমা- মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক শত্রু পিএ সাংমার কন্যা আগাথা সাংমার কাছে হেরে যান। তুরা কেন্দ্র ৪০ বছর ধরে পিএ সাংমার দুর্গ। উল্লেখযোগ্য বিষয়, ১৯৯৩ সাল থেকে বিধানসভা ভোটে হারেননি মুকুল। ২০১৮ সালে পিএ সাংমার ছেলে কনরাড সাংমার বিরুদ্ধে বিধানসভায় হেরে যান মুকুল। লোকসভায় ভাগ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে হার মানলেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.