কিংশুক প্রামাণিক, বেঙ্গালুরু: সদ্য বিজেপিকে (BJP) ধুয়ে মুছে দেওয়া কন্নড় রাজ্যে পা দিয়ে মনে হচ্ছিল, এমনই একটা বিজেপিমুক্ত ভারত দেখার সংকল্প নিয়ে আসুমদ্র হিমাচলের বিরোধী নেতানেত্রীরা এই রাজ্যে এসেছেন বলেই কি শহরজুড়ে ‘ইউনাইটেড উই স্ট্যান্ড’পোস্টার। হতেই পারে। কারণ, মহাজোট হচ্ছে বুঝেই বিজেপিও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিধায়ক কিনে নেওয়ার সর্বোচ্চ উদাহরণ সৃষ্টি করার পর দল ভাঙারও চেষ্টা হবে না কে বলল। হয়তো সেই জন্য সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi) থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), লালু যাদব থেকে এম কে স্ট্যালিন, সবাই অতি সতর্ক।
সোমবার প্রস্তুতিসভায় সেটাই বেশি গুরুত্ব পেল। আজ মঙ্গলবার তাজ ওয়েস্ট ইন হোটেলে মেগা বৈঠক। ২০২৪-কে সামনে রেখে বিরোধী জোটের বড় ঘোষণা হবে। সকাল ১১টায় বৈঠক শুরু। দুটো পর্যন্ত চলার পর সাংবাদিক বৈঠক। সোমবারের প্রস্তুতি বৈঠকে সব দলের হাতে একটি কর্মসূচির খসড়া তুলে দেওয়া হয়। তার ভিত্তিতে আজ আলোচনা করে একটি অভিন্ন কর্মসূচি প্রাথমিকভাবে ঘোষণা হবে। এদিনও সব দল একমত হয়েছে, বিজেপিকে হারাতে গেলে একের বিরুদ্ধে এক চাই।
সবাই এসে গিয়েছেন। বাড়তি মাত্রা সোনিয়ার উপস্থিতি। পাটনার চেয়ে দল আরও ভারী। সবাই নতুন জোট গঠনে একমত। ফলে বিলুপ্ত হতে চলেছে ইউপিএ।
মনমোহন সিং সরকারের সময় ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্ট বা ইউপিএর জন্ম হয়। বর্তমান পরিস্থিতির তাগিদে নতুন জোটের নতুন নাম ঘোষণা হতে পারে। ইন্ডিয়ান ইউনাইটেড ফ্রন্ট না কি ইউনাইটেড ইন্ডিয়া মোর্চা- কী নাম হবে মহাজোটের তা নিয়ে নেতারা ঘরোয়া কথা বলেছেন।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে বিকেলে বেঙ্গালুরু পৌঁছন মমতা। তৃণমূলের তরফে এসেছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। শরদ পাওয়ার ছাড়া পাটনা বৈঠকের সব নেতাই এসে গিয়েছেন। এই প্রথম কংগ্রেসের আহ্বানে ডাকা এত বড় বৈঠকে হাজির কেজরিওয়াল। সকালেই সাংবাদিক বৈঠক করে জোটের দ্বিতীয় সভার অভিমুখ নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক কে বেণুগোপাল, জয়রাম রমেশরা।
তাঁদের মূল কথা, আজকের বৈঠকে যোগ দেবে ২৬ দল। পাটনার চেয়ে আরও ১০টি বেশি দল। দ্বিতীয় বৈঠক থেকে আগামী কর্মসূচি ঘোষণা হবে। সংসদ খুলছে। যৌথ লড়াই করবে সব কটি দল। বিরোধিতা হবে দিল্লির অধ্যাদেশের। দেশে সংবিধান বিপন্ন। নরেন্দ্র মোদি থাকলে দেশের বহুত্ববাদ ভেঙে পড়বে। এই বৈঠক গেম চেঞ্জার। প্রশ্ন ছিল জোটের নেতা কে হবেন? কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়ে দিল, “কেউ একজন নন, জোটে সবাই নেতা।”
বস্তুত এটাই বোধহয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। জোটের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর দাবি থেকে সরে এলেন সোনিয়া-রাহুলরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.