সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক’দিন আগে সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এবার মহারাষ্ট্রে একটি সম্মাননা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কার্যনির্বাহী বিভাগের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই। তিনি বলেন, যদি বিচারপতিরা প্রোটোকল ভঙ্গ করতেন, তাহলে আর্টিকল ১৪২ নিয়ে আলোচনা শুরু হত, যা সুপ্রিম কোর্টকে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করে থাকে। এইসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন, গণতন্ত্রের তিনটি স্তম্ভই সমান।
গত মাসে বিচার বিভাগের শীর্ষ পদের দায়িত্ব পান গাভাই। তিনি দেশের দ্বিতীয় দলিত বিচারপতি। রবিবার মুম্বইয়ে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। পরে বাবাসাহেব আম্বেদকরের স্মৃতিসৌধ চৈত্য ভূমি পরিদর্শন করেন। দেশের প্রধান বিচারপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল মহারাষ্ট্রের মুখ্য সচিব, পুলিশ মহাপরিচালক এবং মুম্বই পুলিশ কমিশনারের। যদিও গাভাইয়ের ভাষণের সময় তাঁরা উপস্থিত ছিলেন না।
এই বিষয়টিকে একেবারেই ভালো ভাবে নেননি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “গণতন্ত্রের তিনটি স্তম্ভ—বিচারব্যবস্থা, আইনসভা এবং কার্যনির্বাহী সমান। প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে অন্য প্রতিষ্ঠানের পারস্পরিক সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে। মহারাষ্ট্রের একজন ব্যক্তি ভারতের প্রধান বিচারপতি হয়েছেন এবং প্রথমবার মহারাষ্ট্র সফরে এসেছেন, অথচ মহারাষ্ট্রের মুখ্যসচিব, পুলিশ মহাপরিচালক বা মুম্বই পুলিশ কমিশনার উপস্থিত থাকার প্রয়োজন মনে করেননি, এই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।” যোগ করেন, “প্রোটোকল কোনও নতুন কিছু নয়, এটি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের আরেকটির প্রতি শ্রদ্ধার প্রশ্ন।”
এখানেই না থেমে, বিচারপতি গাভাই আরও বলেন, “যখন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান প্রথমবার রাজ্যে আসেন, তখন তাঁর সঙ্গে কেমন আচরণ করা হবে, তা নতুন করে ভাবার দরকার। আমাদের ( সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা) মধ্যে যদি কেউ এমন করতেন, তাহলে আর্টিকল ১৪২ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যেত।” যোগ করেন, “এগুলো ছোট বিষয় মনে হতে পারে, কিন্তু জনগণকে এ সম্পর্কে সচেতন করার প্রয়োজন রয়েছে।” আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘লাইভ ল’-র প্রতিবেদন অনুসারে, এই অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, “বিচার বিভাগ, না সংসদ, না নির্বাহী বিভাগ, সর্বোচ্চ স্থানে কে রয়েছে? যদি এই প্রশ্ন করা হয়, তবে আমি বলব শুধুমাত্র দেশের সংবিধানই সকলের উপরে রয়েছে।”
উল্লেখ্য, পরে প্রধান বিচারপতি যখন চৈত্য ভূমি পরিদর্শনে যান, তখন মহারাষ্ট্রের মুখ্য সচিব সুজাতা সাউনিক, পুলিশ মহাপরিচালক রশ্মি শুক্লা এবং মুম্বই পুলিশ কমিশনার দেবেন ভারতী উপস্থিত ছিলেন। সম্ভবত প্রধান বিচারপতির মন্তব্য তাঁদের কানে পৌঁছেছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.