সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মিষ্টি কথার জালে ফাঁসিয়ে প্রথমে বন্ধুত্ব, তার পর অপরিচিতকে প্রস্তাব দেওয়া হত পানীয়ের। মারণ বিষ সায়ানাইড মেশানো সেই পানীয় খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তেন ব্যক্তি। এর পর টাকা-পয়সা, গয়না লুট করে চম্পট দিত আততায়ীরা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে একের পর এক শিকার বেছে নিত হত্যাকারীরা। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল ৩ মহিলা সিরিয়াল কিলার।
অন্ধ্রপ্রদেশের তেনালি জেলায় গত কয়েকদিন ধরে উদ্ধার হচ্ছিল একের পর এক মৃতদেহ। এর পরই তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে এল ভয়াবহ তথ্য। এই ঘটনায় ৩ মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যারা হলেন, মুনাগাপ্পা রজিনি, মাদিয়ালা বেঙ্কেটেশ্বরী এবং গুলরা রামনম্মা। গত বৃহস্পতিবার এই ৩ সিরিয়াল কিলারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, মূলত সোনা ব্যবসায়ী ও সঙ্গে প্রচুর টাকা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের টার্গেট করত হত্যাকারীরা। এর পর পরিকল্পিত ছকে চলত বাকি কাজ। জেরায় অভিযুক্তরা স্বীকার করে নিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত তাদের হাতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন এক মহিলাও। পাশাপাশি আরও ২ জন কোনও মতে এদের হাত থেকে বেঁচে যান।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে এই গোটা পরিকল্পনার মাস্টার মাইন্ড মাদিয়ালা বেঙ্কেটেশ্বরী। গত ৪ বছর ধরে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। তখনও ছোটখাট নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এর পর কম্বোডিয়া গিয়ে সাইবার অপরাধ চালাতে থাকেন। সম্প্রতি দেশে ফিরে শাগরেদ জুটিয়ে শুরু করেন একের পর এক হত্যাকাণ্ড। মাদিয়ালার কাছ থেকে সায়ানাইড-সহ আরও নানা জিনিসপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়া যার কাছ থেকে অভিযুক্ত সায়ানাইড জোগাড় করত তাকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
একের পর এক হত্যা রহস্যের কিনারা করার পর রেনালির পুলিশ সুপার সতীশ কুমার বলেন, অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা তাঁদের অপরাধ স্বীকার করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুন, চুরি, প্রমাণ লোপাট, অপরাধের ষড়যন্ত্র-সহ আরও একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি এই ধরনের ঘটনা থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অপরিচিত কারও সঙ্গে প্রথম পরিচয়ে বন্ধুত্ব করবেন না। এবং অপরিচিতের কাছ থেকে কিছু খাবেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.