সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৭০ বছর পেরিয়েছে ভারত স্বাধীনতা পেয়েছে। একটু একটু করে উন্নতির শিখরে পৌঁছে গিয়েছে দেশ। ডিজিটাল ভারতের স্বপ্ন দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই চিন্তাভাবনা সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করছেন তিনি। কিন্তু সত্যিই কি দেশের সব প্রান্তে কার্যকরী প্রধানমন্ত্রীর সেই চিন্তাভাবনা ? আদৌ কি দেশের সব প্রান্তে সেই পরিস্থিতি রয়েছে ? যেখানে খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান-সহ প্রাথমিক চাহিদা মিটিয়ে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্বপ্ন দেখবেন মানুষ। হয়তো না। কারণ, এখনও পানীয় জলের সংকটে হাহাকার করতে হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে। একই ছবি অসমের ডিব্রুগড়ের এক প্রত্যন্ত গ্রামের। যাদের কাছে পানীয় জলের একমাত্র উৎস নোংরা একটি জলাধার।
অসমের ডিব্রুগড়ের এই গ্রামটি বিজেপি সাংসদ রামেশ্বর তেলির কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। প্রায় ৮০০০ মানুষের বাস এই গ্রামে। তাঁদের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জলের কার্যত কোনও ব্যবস্থা নেই। প্রবল জল সংকটের মধ্যে দিয়েই দিন গুজরান এই ৮০০০ মানুষের। বাধ্য হয়ে তৃষ্ণা মেটাতে এলাকার একমাত্র নোংরা একটি জলাধারের জলই ব্যবহার করছেন তাঁরা। আবার সেই জলেই চলছে ঘরের কাজ থেকে স্নান। দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই চলছে। আর তার ফল যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তা টের পাচ্ছেন গ্রামের বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের অধিকাংশ মানুষই হয় জন্ডিসে আক্রান্ত, নয়তো জলবাহিত অন্য কোনও রোগে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা বিনোদ মোরান জানিয়েছেন, তাঁর ৩ সন্তানেরই জলবাহিত রোগে মৃত্যু হয়েছে। এরপর গ্রাম ছাড়তে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাজি হননি কেউ। ফলে বছরের পর বছর মৃত্যুর সঙ্গে ঘর করছেন তাঁরা। গ্রামের অবস্থা এমনই যে ওই গ্রামে মেয়ের বিয়েও দিতে চান না কেউ। তবে এভাবেই দিন কাটাচ্ছেন ওই গ্রামের বাসিন্দারা।
হাতে মাত্র এক দিন। ১১ এপ্রিল অসমে প্রথম দফার নির্বাচন। ভোটের আগে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছে সব দল। প্রচুর আশ্বাসও পেয়েছেন দেশবাসী। তবে সেসব নিয়ে ভাবেন না ডিব্রুগড়ের ওই গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের কথায়, ‘ ভোট আসবে, ভোট যাবে। প্রতিশ্রুতিও মিলবে। তবে আমাদের অবস্থার কোনও পরিবর্তন হবে না।’ তবে এই গ্রামের মানুষজনের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে আশঙ্কায় এঁরা নিজেরাই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.