সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডাইনি অপবাদে মা ও মেয়েকে নেড়া করে মানুষের মলমূত্র খাওয়ানো হল। এমনই অভিযোগ উঠেছে ১১ জন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ১১ জনকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই নারকীয় ঘটনাটি ঘটেছে রাঁচির সোনাহাতু থানার দুলামি গ্রামে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে আক্রান্ত মা ও মেয়ে থানায় অভিযোগ জানানোর পর। গত শুক্রবার স্থানীয় সোনাহাতু থানায় অভিযোগ জানান আক্রান্ত মা ও মেয়ে। তারপরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। গ্রামে গিয়ে অভিযুক্ত ১১ জন প্রতিবেশীকেই গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গিয়েছে, মা কারোদেবী (৬৫) ও মেয়ে বাসন্তী (৩৫) একসঙ্গেই থাকতেন। বেশ কিছুদিন আগে তাঁদের এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েকদিন পর তাঁর মৃত্যু হয়। ফের দুজন আত্মীয় অসুস্থ হয়ে পড়তেই মা মেয়ের দিকে আঙুল ওঠে। মৃত আত্মীয়র পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়, ডাইনিবিদ্যার সাহায্যে মা ও মেয়ে এই সব ঘটাচ্ছে। অভিযোগ, এরপরেই প্রায় ১১ জন প্রতিবেশী তাঁদের দুজনের উপরে চড়াও হয়। প্রথমে বেধড়ক মারধর করে হেনস্তা করা হয়। তারপর বাড়ি থেকে টেনে বের করে এরপর মানুষের মলমূত্র খেতে বাধ্য করা হয়। এহেন হেনস্তার পরও আক্রান্ত মা মেয়ের রেহাই মেলেনি। দুজনকে নদীর চরে টেনে নিয়ে গিয়ে মাথা নেড়া করে দেওয়া হয়।
ঘটনার পরে প্রায় ঘরবন্দি হয়েই দিন কাটাচ্ছিলেন মা মেয়ে। শেষপর্যন্ত আর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শুক্রবার পুলিশের দ্বারস্থ হন। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরেই ১১ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ডাইনি অপবাদে অত্যাচারের ঘটনা এই অঞ্চলে নতুন কিছু নয়। গত ১৭ বছরে প্রায় ৫০০ মহিলাকে হেনস্তা হতে হয়েছে। খুনও হয়েছেন অনেকে। ডাইনি বিদ্যায় পারদর্শী এক চিকিৎসককে সমর্থন করার অপরাধে ২০১৬-য় একই ভাবে হেনস্তা হন এক উপজাতি মহিলা। তাঁকে মানুষের মলমূত্র খেতে বাধ্যা করার পাশাপাশি মাথা নেড়া করে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল বোকারোর কল্যাণপুর গ্রামে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.