সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৩০ বছর হয়ে গেছে। কখনও এরকম অনুভব করেননি পারভিন। দিল্লির মতো শহরে স্বামী দুই সন্তান নিয়ে থাকেন। সবই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু, সেই দিনটা থেকে সবকিছু গোলমাল হয়ে গেল। সে’দিন নয়ডা থেকে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে আসছিল পারভিনদের গাড়ি। হঠাৎ সামনে চলে এল ট্রাকটা। ইউসুফ কোনও মতে ঠিক সময়ে গাড়িটা ঘুরিয়ে দিয়েছিল বলে রক্ষা।
ফ্ল্যাটে ফিরেই কেমন যেন ঘুম ঘুম পাচ্ছিল পারভিনের। বোধহয় এতটা রাস্তা, অ্যাক্সিডেন্টের ট্রমা – এই জন্যই এরকম লাগছে। হঠাৎ যেন কেউ তাঁর মাথার ভিতর থেকে চিৎকার করে উঠল, ‘না যাব না…?’। এক ঝটকায় ঘুমটা কেটে গেল পারভিনের। পরে মনে হল, পাশের ফ্ল্যাটে কেউ বলে থাকবে হয়তো।
দু’দিন বাদেই ঘটল আরেকটা ঘটনা। বাড়িতে শ্বশুরমশাই এসেছিলেন পুরনো দিল্লি থেকে। বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা করছিলেন। কী একটা কাজে যেন রান্নাঘরে গিয়েছিলেন। আর একটু হলে টোস্টারটা তাক থেকে পড়ছিল তাঁর মাথায়। প্রথমে কাকতালীয় ঘটনা মনে হলেও পরে পারভিন ভাবল, টোস্টারটা তো অনেক ভিতরে রাখা ছিল। পড়ার তো কোনও কারণ ছিল না।
এই চিন্তাগুলোই মাথায় ঘুরছিল পারভিনের। বেডরুমে শুয়ে ছিলেন তিনি। শুধু ডিম লাইটটা জ্বালানো ছিল। আচমকা বসার ঘর থেকে একটা শব্দ শোনা গেল। বুকের মধ্যে যেন ছ্যাত করে উঠল পারভিনের। কিন্তু, গিয়ে দেখতে তো হবেই। কোনও রকমে সাহসে ভর করে বসার ঘরের দিকে গেলেন। দূর থেকে দেখে যেন মনে হল কেউ বসে আছে। বোধহয় ইউসুফ এসে গেছে। যেন হাফ ছাড়ল পারভিনের। এগিয়ে গেলেন। কিন্তু, মানুষের মাথাটা ঘুরতেই যেন ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল তাঁরা সারা শরীরে। এ যে তিনিই বসে আছেন। চোখ দুটো জ্বলছে!
আর কিছু মনে নেই পারভিনের। দিন সাতেক পর হাসপাতালে জ্ঞান ফিরেছিল তাঁর। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আর সেই ফ্ল্যাটে ফেরেননি। শ্বশুরবাড়ি গিয়ে উঠেছিলেন। পরে বাসা বদল করে নেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.