সুব্রত বিশ্বাস: ট্রেন বসেই বিমানযাত্রার অনুভূতি পেতে চান? কম খরচে, অত্যন্ত আরামে যাত্রা করতে চান অনেকটা পথ? তাহলে আপনার জন্য এসে গেল ‘অনুভূতি লাক্সারি কোচ’। প্রথম দফায় শতাব্দী এক্সপ্রেসের বাতানুকুল প্রথম শ্রেণি ও এক্সিকিউটিভ চেয়ার কারে ‘অনুভূতি কোচ’ যুক্ত হবে।
ইতিমধ্যেই চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে এই ধরনের ১০টি কোচ তৈরি হয়েছে। এক একটি কোচের জন্য ২.৮৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। চলতি মাসের শেষ দিকে বা জানুয়ারির গোড়ায় কামরাগুলি জুড়ে দেওয়া হবে শতাব্দী এক্সপ্রেসের সঙ্গে। তবে কোন রুটের শতাব্দী এক্সপ্রেসে যুক্ত হবে এই কোচ, সেটা এখনও নির্ধারিত হয়নি। ৫৬টি আসন বিশিষ্ট কোচের বিন্যাস করা হয়েছে ২+২ নিয়মে। অর্থাৎ, দু’জন করে যাত্রী পাশাপাশি বসতে পারবেন। প্রতিটি আসনের পিছনে থাকবে টিভি স্ক্রিন, পার্সোনাল হেডফোন। অনেকটা মুম্বই-গোয়া তেজস এক্সপ্রেসের মতো।
চেয়ার কারে দীর্ঘক্ষণ বসার অস্বস্তি দূর করতে এই নয়া কোচে যাত্রীদের পা রাখার জন্য লেগ রেস্ট-এর ব্যবস্থা থাকবে। যেটি সুবিধামতো ওঠানো বা নামানো যাবে। চেয়ারে বসেই মিলবে এলসিডি স্ক্রিনে সিনেমা, ভিডিও দেখার সুযোগ। বই পড়ার জন্য থাকবে বিশেষ আলোর ব্যবস্থা। যাতে অন্যদের ঘুমে কোনও ব্যাঘাত ঘটবে না। আসনগুলি মুড়ে দেওয়া হয়েছে মোটা গদিতে।
কোচগুলির বাইরের দেওয়ালের সৌন্দর্যের দিকেও বিশেষ নজর দিচ্ছে রেল। কোচগুলির বাইরের দেওয়ালের রং হবে নীল। অন্যান্য নতুন ট্রেনের মতো এখানেও থাকবে অ্যান্টি-গ্রাফিটি ভিনাইলের আস্তরণ। ভিতরে কামরার মধ্যে থাকবে এলইডি স্ক্রিন। বড় স্ক্রিনে ফুটে উঠবে আসন্ন স্টেশন, গন্তব্যের দূরত্ব।
কামরার মাঝখানে চার আসন বিশিষ্ট সিটের সামনের টেবিলেও থাকবে এলসিডি স্ক্রিন। একসঙ্গে চারজন সিনেমা দেখতে পারবেন সেখানে। স্ক্রিনগুলিকে সুবিধামতো উপরের দিকে বা নিচের দিকে নামিয়ে নেওয়া যাবে। প্রয়োজনে রেলকর্মীদের ডাকতে একটি ‘বেল’ থাকবে কামরার উপরের দিকে। চেয়ার থেকে না উঠেই ডেকে নিতে পারবেন রেলকর্মীদের।
দু’জন যাত্রীর সিটের মধ্যেখানে থাকবে মোবাইল চার্জের বন্দোবস্ত। এছাড়াও ট্রেনের দেওয়ালেও থাকবে আরো একটি চার্জিং পয়েন্ট। এতদিন যাত্রীদের খাওয়ার টেবিলটি সাধারণত পিছনের সিটের সঙ্গে লাগানো থাকত। এখন থেকে যাত্রীদের হাত রাখার জায়গার নিচে থাকবে এই টেবিল। যেটি ইচ্ছামতো তুলে ও নামিয়ে রাখা যাবে।
যাত্রীদের মালপত্র রাখার জন্য প্রথাগত জায়গাটিও আমূল বদলে গিয়েছে অনুভূতি কোচে। সেখানেও ভিনাইল মোড়া থাকবে যাতে যাত্রীদের ব্যাগ বা স্যুটকেসে কোনও স্ক্র্যাচ না পড়ে। আসন বিন্যাসের জন্য নম্বরের সঙ্গেই থাকবে ‘ব্রেইল’ হরফও, যাতে দৃষ্টিহীনদের নিজেদের আসন খুঁজে পেতে কোনও সমস্যা না হয়।
অনুভূতি কোচের শৌচাগারকেও পালটে ফেলা হয়েছে। ‘টাচফ্রি ট্যাপ’, হ্যান্ড ড্রায়ার, লিকুইড সোপ থাকবে শৌচাগারে। টয়লেটে কেউ রয়েছেন না খালি রয়েছে, সেটা প্রত্যেকের আসনের পাশেই একটি ছোট স্ক্রিনে ফুটে উঠবে সঙ্কেতের মাধ্যমে। বিমানের মতো কামরার শেষ দিকে থাকবে একটি অ্যানাউনস সিস্টেমও।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.