সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির প্রাণকেন্দ্র হল বাংলা সাহিব গুরুদ্বার। আজ পর্যন্ত কেউই এখান থেকে না খেয়ে ফিরতে পারেননি। লকডাউনের আবহে সেই গুরুদ্বারেই দরিদ্রদের খাওয়াতে চলছে রান্নার দক্ষযজ্ঞ আয়োজন।
বাংলা সাহিব গুরুদ্বারে প্রতিদিনই প্রায় হাজার হাজার মানুষের খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়। রোজ এখানের কমিউনিটি কিচেনে রান্নার জন্য ব্যবহার করা হয় ষোলো কিলো আটা, বারো চাল, ৭০০-৮০০ কিলো ডাল। এখান থেকে খাবার তৈরি করা তা সরবরাহ করা হয় দিল্লির ১৭টি স্থানে। প্রতিটি স্থানে ‘থালি’-র মত করে সাজিয়ে সেই খাবার পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ‘থালি’তে প্রতিদিন থাকছে একেক ধরণের সবজি, চাপাটি, রুটি, ঘি, ডাল থাকে। প্রতিদিন গুরুদ্বারের ৫৩ জন সেবক এই কাজের বিশাল আয়োজন করে থাকেন। একটি সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় দিল্লির শিখ গুরুদ্বারের ম্যানেজমেন্ট (DSGM) জানায়, রাজ্যের বিভিন্ন লঙ্গরগুলিতে দেখাশোনা করেন তাঁরা। ২৪ মার্চ থেকে তাঁরা রাজ্যের সমস্ত মানুষকে খাওয়ানোর দায়িত্ব নেন। কমিউনিটি কিচেনের প্রধান হারভেজ সিং বলেন, “আমাদের ধর্ম আমাদেরকে শেখায় যাতে গরিব, দুখীদের প্রয়োজনে আমরা পাশে থাকতে পারে। এটা আমাদের কাজের মধ্যে পড়ে যে আমরা প্রয়োজনে প্রচুর মানুষদের পাশে থাকতে পারি। তাই আমাদের লক্ষ্য যাতে প্রতিটি মানুষ খাবার পান। যতক্ষণ না সব মানুষ খাবার পান ততক্ষণ পর্যন্ত এই কিচেনে রান্নার কাজ চলতে থাকে।” ৫৩ সেবকদের নিয়ে এই গুরুদ্বার চালানো হয়। সেখানে রেশন জোগাড় করা, সবজি কাটা, বাসন ধোয়া, রান্না করা খাবার পৌঁছে দেওয়া সেই সব কাজ তারা একটি নির্ধারিত পদ্ধতিতে করে থাকেন। এমনকি গুরুদ্বারার প্রতিটি অংশ আলাদা আলাদা কাজের জন্য ভাগ করে রাখা হয়েছে।
জানা যায়, প্রায় রাত ২টো থেকে উঠে ৬ জন রাধুনি এই খাবারের আয়োজন করেন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তারা দিনে ১৫-১৬ ঘণ্টা ধরে রান্না করে চলেছেন। নিখট্টর সিং-এর কথায়, “আমরা রাত ২ থেকে উঠে রান্নার আয়োজন করতে শুরু করে দিই যাতে পরের দিন সকালে ১১টার মধ্যে রান্না শেষ হয়ে যায়। কারণ তারপরে খাবার বিতরণ করার কাজ শুরু করতে হয়।” বিগত ১০ বছর ধরে গুরুদ্বারে জনসেবার কাজ করে চলেছেন নিখট্টর সিং-এর পরিবার। তাই লকডাউনে মানুষের সেবার কাজ করা তাঁদের কাছে নতুন কিছু নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.