সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহারের অন্যতম প্রাচীন শহর তথা হিন্দুদের পবিত্র তীর্থক্ষেত্র গয়ার নাম বদল। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমাররে নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গয়ার নতুন নাম হবে ‘গয়াজি’। স্থানীয় মানুষের আবেগ, ওই অঞ্চলের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক তাৎপর্য বিবেচনা করে এই নামবদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে সরকারের তরফে।
গয়ার নাম বদলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন জেডিইউ ও বিজেপির রাজ্য নেতারা। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় কুমার সিনহা এই সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দিয়েছেন। সোশাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, ‘এই অঞ্চলের ধর্মীয় গুরুত্বকে মাথায় রেখে বিখ্যাত গয়া শহরের নামকরণ করা হয়েছে গয়াজি। কোটি কোটি হিন্দুর বিশ্বাস, ভক্তি এবং পিণ্ডদানের জন্য দেশজুড়ে বিখ্যাত এই শহরের জন্য গৃহীত এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।’ পাশাপাশি জেডিইউ শীর্ষ নেতা সঞ্জয় ঝা এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘নাম বদলের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য আমি মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞ জানাচ্ছি এবং গয়াজি-র সকল বাসিন্দাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।’
এছাড়া বিজেপি নেতা তথা সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান, এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘রাজ্য মন্ত্রিসভা গয়ার নাম বদলে গায়াজি করেছে। এই সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই। এটা অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত। এই সিদ্ধান্ত আবারও গয়ার ধর্মীয় গুরুত্বকে সামনে আনল এবং সনাতন সংস্কৃতির প্রতি এনডিএ সরকারের অঙ্গীকার এবং ধর্মীয় স্থানগুলি রক্ষা করার স্বদিচ্ছা আবারও সামনে এল।’
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে গয়ার মাহাত্ম্য অপরিসীম। এখানে রয়েছে প্রাচীন বিষ্ণু মন্দির। পৌরাণিক মতে, এখানেই ভগবান বিষ্ণু সুদর্শন চক্রের সাহায্যে গয়াসুরের দেহকে তিন টুকরো করে কেটে ফেলেন এবং গয়াসুর রাক্ষসের উপর তাঁর পদচিহ্ন স্থাপন করেছিলেন। একসময় ব্রহ্মা গয়াসুরকে বর দিয়েছিলেন, তাঁর দর্শন করলেই স্বর্গে যাওয়া যাবে। সুদর্শনের আঘাতে মৃত্যুর আগে গয়াসুর বিষ্ণুর কাছে ইচ্ছে প্রকাশ করেন, তাঁর দেহের উপর তৈরি ভূমিতে পিণ্ডদান করলে যেন স্বর্গে যেতে পারেন। বিষ্ণু তাঁর সেই ইচ্ছেপূরণ করেন। গয়াসুর মাটিতে শুয়ে পড়লে তাঁর উপর পবিত্রভূমি তৈরি হয়, যার নাম দেওয়া হয় গয়া। হিন্দুদের পাশাপাশি বৌদ্ধধর্মের মানুষের কাছেও গয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। গয়া থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে বুদ্ধগয়া। সেখানেই বোধি বৃক্ষের নিচে জ্ঞানলাভ করেছিলেন গৌতম বুদ্ধ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.