সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় জনতা পার্টির(বিজেপি) সাংসদ কে সি প্যাটেলকে মধুচক্রের ফাঁদে ফেলার অভিযোগে অভিযুক্ত মহিলাকে একদিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিল দিল্লির একটি আদালত। রবিবার এই নির্দেশ দেয় আদালত।
অভিযুক্তকে সোমবার ফের আদালতে তোলা হবে। সম্প্রতি সাংসদ কে সি প্যাটেলের অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে গাজিয়াবাদে নিজের বাড়ি থেকে অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। পুলিশের কাছে প্যাটেল অভিযোগ করেন, তাঁর ঠান্ডা পানীয়ে মাদক মিশিয়ে তাঁকে বেহুঁশ করে আপত্তিকর অবস্থায় অভিযুক্ত মহিলা কয়েকটি ছবি ও ভিডিও তুলে রাখে। এই কাণ্ডের পিছনে অভিযুক্ত মহিলা ও তার কয়েকজন মহিলা সঙ্গীও জড়িত বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ।
BJP MP KC Patel honey trap case: Accused sent to one day judicial custody by a Delhi court, will be produced in court tomorrow again.
— ANI (@ANI_news) May 7, 2017
পুলিশকে প্যাটেল জানান, তাঁর কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা চেয়ে চাপ দিচ্ছে ওই মহিলা। টাকা না দিলে সাংসদের সঙ্গে ওই মহিলার ভিডিও অনলাইনে পোস্ট করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। দিল্লি পুলিশ কমিশনার অমূল্য পট্টনায়েকের কাছে বিজেপি সাংসদ অভিযোগ করেন, এর আগেও ওই মহিলা ও তার গ্যাং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে অর্থ ও চাকরি চেয়েছে। গত শনিবার নর্থ অ্যাভিনিউ পুলিশ স্টেশনে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়।
অভিযুক্ত মহিলাও আবার দিল্লির এক আদালতের দ্বারস্থ হয়। তার দাবি, বিজেপি সাংসদ তাকে ধর্ষণ করেছেন। গত ৩ মার্চ প্যাটেল নিজের বাড়িতে তার ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ করে ওই মহিলা। একবার নয়, একাধিকবার। আদালতকে ওই মহিলা আরও জানিয়েছে, দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে ওই মহিলা। প্রভাব খাটিয়ে বিজেপি সাংসদই এই নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশকে, আদালতকে জানিয়েছেন ওই মহিলা। তবে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে প্যাটেল জানিয়েছেন, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আইনের উপর তাঁর সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে।
বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, সম্প্রতি মধুচক্রের পান্ডা ওই মহিলা তাঁর কাছে সাহায্য চাইতে আসে। গাজিয়াবাদে ওই মহিলার বাড়িতে পৌঁছে দিতে অনুরোধ করে। সাংসদ যখন ‘সাহায্যপ্রার্থী’ মহিলাকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিতে যান, তখন ওই মহিলা ঠান্ডা পানীয়ে মাদক মিশিয়ে তাঁকে অফার করে বলেও জানিয়েছেন ‘আক্রান্ত’ সাংসদ। তারপর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন ওই সংসদ, আর কিছুই তাঁর মনে নেই বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। যখন জ্ঞান ফেরে, তখন বুঝতে পারেন তিনি মধুচক্রের পাল্লায় পড়েছেন। সোজা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন অভিযুক্ত মহিলার বিরুদ্ধে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, যে মহিলা ওই সাংসদকে ফাঁসিয়েছে সে এর আগেও একাধিক শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রভাবশালীদের ‘ব্ল্যাকমেল’ করেছে। একাধিক সুন্দরী মহিলাকে নিয়ে গড়া একটি গ্যাংও রয়েছে তার। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলা এর আগেও মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে প্রভাবশালীদের তার ফাঁদে পা দিতে বাধ্য করেছে। প্রথমে চায়ের নিমন্ত্রণ জানিয়ে, পরে সেই চায়ে মাদক মিশিয়ে প্রভাশালীদের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থার ছবি তুলে রাখত ওই মহিলা। ইংরাজিতে চোস্ত, দেখতেও দুর্দান্ত ওই মহিলাকে দেখে নাকি বোঝাই দায় যে তার বাড়িতেই নিয়মিত বসে মধুচক্রের আসর। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছ থেকে মোটা টাকা দাবি করত ওই মহিলা। অথবা কোনও উঁচু পদে চাকরি। দাবি না মানা হলে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করার হুমকি দিত ওই চক্রের পান্ডা। গতবছরও আর এক সাংসদের বিরুদ্ধে এরকম মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছিল অভিযুক্ত মহিলা। পুলিশ সেই ঘটনার ফাইলও যাচাই করে দেখছে বলে খবর মিলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.