সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডোকলাম ইস্যুতে বড়সড় ধাক্কা খেল চিন। এবার প্রকাশ্যেই ভারতের সমর্থনে এগিয়ে এল জাপান। টোকিও জানিয়ে দিল, গায়ের জোরে সীমা পরিবর্তনের চেষ্টা যেন না করা হয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বেজিংকে কার্যত হুমকি দিল টোকিও।
উল্লেখ্য, দ্রুতই ভারত সফরে আসছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। তার আগেই টোকিওর এই মন্তব্যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এমনিতেই ডোকলাম বিবাদে প্রায় একঘরে লাল চিন। দক্ষিণ চিন সাগর থেকে শুরু করে একাধিক ইস্যুতে আমেরিকা-সহ একাধিক দেশের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছে কমিউনিস্ট দেশটি। এবার সেই বলয় পূর্ণ করে জাপানের ধাক্কায় টালমাটাল বেজিংয়ের অবস্থান বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
[ভ্যান নিয়ে নিরীহ পথচারীদের পিষে হত্যা আইএসের, বার্সেলোনায় মৃত্যুমিছিল]
প্রায় দু’মাস ধরে ডোকলাম সীমান্তে ট্রিগারে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে ভারত ও চিনের হাজার হাজার সেনা। যেকোনও মুহূর্তে শুরু হতে পারে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। ভূটানের ডোকলাম এলাকায় সড়ক বানিয়ে ভারতের ‘চিকেন নেক’ করিডরে থাবা বসাতে চাইছে চিন। আর তা করতে পারলেই অসম, অরুণাচল প্রদেশ-সহ উত্তর-পূর্বের ‘সাত বোন’ রাজ্যের সঙ্গে ছিন্ন হয়ে যাবে বাকি দেশের যোগাযোগ। তবে ড্রাগনের চাল ধরতে পেরেই ডোকলামে ফৌজ পাঠিয়ে চিনা চক্রান্ত বিফল করে দেয় দিল্লি। ভারতে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত কেনজি হিরামাতসু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বিতর্কিত সীমান্তে পেশীশক্তির ব্যবহার থেকে যেন বিরত থাকে চিন।
Japan Backs India on Doklam, Envoy Says ‘Don’t Resort To Change of Status Quo By Force’
— IndiaTodayFLASH (@IndiaTodayFLASH) August 18, 2017
সম্প্রতি, ভারত ও চিনের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে ডোকলামে সমস্যার সমাধান করার আরজি জানিয়েছে আমেরিকা। এছাড়াও পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনকে বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর তকমা দিয়েছে আমেরিকা। হিজবুল জঙ্গি নেতা সৈয়দ সালাউদ্দিনকে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার দু’মাসের মধ্যে কাশ্মীরে সক্রিয় হিজবুল মুজাহিদিনকে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী তথা বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর তকমা দিল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই পদক্ষেপে পাকিস্তান ও চিনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে। ট্রাম্প প্রশাসন কার্যত ঘুরিয়ে জিনপিং সরকারকে বার্তা দিয়েছে, দিল্লির পাশেই রয়েছে ওয়াশিংটন।
[ভারতের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে ভুয়ো ভিডিও প্রকাশ চিনা মিডিয়ার]
এক বিবৃতিতে ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, চিনের কার্যকলাপে আঞ্চলিক স্থিতাবস্থায় প্রভাব পড়বে। তিনি সাফ জানিয়েছেন ডোকলাম নিয়ে ভুটানের সঙ্গে সমস্যায় জড়িয়েছে চিন। এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি মতোই ভুটানের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে ভারত। তিনি আরও জানিয়েছেন জাপান সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
প্রসঙ্গত, লাদাখের কায়দায় এবার সরাসরি ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালাতে পারে লালফৌজ। এমনটাই সতর্কবার্তা জারি করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো। গোয়েন্দাদের কাছে গোপন খবর রয়েছে, এবার একযোগে হিমাচল প্রদেশ, সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে আসতে পারে চিনা সেনা। হিমাচলের লিপুলেখ পাস, বারাহতি ও উত্তরাখণ্ডেও অনুপ্রবেশ করতে পারে লালফৌজ। তবে এবার তৈরি ভারতও। গতমাসেই, আমেরিকা ও জাপানের সঙ্গে সামরিক মহড়ায় নামে ভারত। ‘মালাবার এক্সারসাইজ’ নামের ওই নৌমহড়ায় শক্তিপ্রদর্শন করে ভারতীয় নৌসেনা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভারত মহাসাগরে চিনের প্রভাব ঠেকাতে ও আমেরিকা, জাপানের সঙ্গে যৌথ সহযোগিতা বাড়িয়ে তুলতে ওই মহড়া বিশেষভাবে সাহায্য করেছে। তবে শেষ পর্যন্ত জাপানও ভারতের পাশে এসে দাঁড়ানোয় লাল চিনের মুখ পুড়ল বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
[অশান্ত পরিস্থিতিতে সেনার মনোবল বাড়াতে লাদাখ যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.