সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত শুক্রবার ছিল তাঁর শেষ কর্মদিন। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের কর্মজীবন শেষ হচ্ছে আগামী ১০ নভেম্বর। তবে শনি ও রবিবারের কারণে ৮ তারিখেই বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয় বিচারপতিকে। আর বিদায়ের আগে তাঁর শেষ রায় হয়ে রইল জনগণের কণ্ঠস্বরকে রোধ করা যাবে না সম্পত্তি ধ্বংসের হুমকি দিয়ে। তিনি জানিয়ে দিলেন, ‘বুলডোজার জাস্টিস’ একেবারেই গ্রহণীয় নয়।
প্রসঙ্গত, বুলডোজার নীতির জন্ম উত্তরপ্রদেশে। পরবর্তী সময়ে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, দিল্লি-সহ বিভিন্ন রাজ্যে অভিযুক্তদের বাড়ি বুলডোজারে গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়েছে, অভিযুক্ত হোক কিংবা দোষী বুলডোজার দিয়ে বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবু এই প্রবণতা কমেনি। নিজের কর্মজীবনের শেষদিনে এপ্রসঙ্গে চন্দ্রচূড় বলেন, ”কোনও সভ্য দেশের বিচারব্যবস্থায় বুলডোজারের সাহায্যে ন্যায়বিচার অজানা। যদি কোনও রাজ্যের সরকারি আধিকারিক বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ধরনের অনৈতিক ও বেআইনি কার্যকলাপের অনুমতি দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে মানতেই হবে যে তা অত্যন্ত ভয়াবহ বিষয়।”
সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ”সম্পত্তি ধ্বংস করে জনগণের কণ্ঠরোধ করা যাবে না। আবাসের নিরাপত্তা জনতার মৌলিক অধিকার। রাজ্যকেও বাধ্যতই এমন নিয়ম মানতে হবে।” এমনকী, কোনও বেআইনি নির্মাণ কিংবা জমি দখলের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই চলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরে এক মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি গাভাই প্রশ্ন তোলেন, “শুধুমাত্র অভিযুক্ত বলেই কী করে কারও বাড়ি ভাঙা হয়? দোষী হলেও তার বাড়ি ভাঙা যায় না।” এর পর রীতিমতো বিরক্তির সঙ্গে তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও এই বিষয়ে প্রশাসনের মনোভাবে বিন্দুমাত্র বদল আসেনি। এদিন চন্দ্রচূড়ের বক্তব্যেও সেই সুরই ধরা পড়ল।
এদিকে, শুক্রবারই ছিল ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের শেষ কর্মদিন। ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হলেও ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বভার সামলাচ্ছেন সেই ২০১৬ সাল থেকে। বিচারপতি হিসেবে এই ৮ বছরের কর্মজীবনে বহু জটিল মামলায় কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। দিয়েছেন একাধিক ঐতিহাসিক রায়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য গোপনীয়তার অধিকার, অযোধ্যা মামলা, শবরীমালায় মহিলা প্রবেশের অনুমতি প্রভৃতি। শুক্রবার প্রধান বিচারপতির বিদায় সম্ভাষণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিষেক মনু সিংভি, কপিল সিব্বলের মতো আইনজীবীরা। সেখানে দেশের বিচারবিভাগে চন্দ্রচূড়ের অবদানের কথা তুলে ধরেন আইনজীবীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.